'ভগবান চমৎকার করছেন না', কোভিড-এর ভয়ে কি ধর্মে আস্থা হারালেন মোহন ভাগবত, জানুন আসল সত্য

Published : May 25, 2020, 02:34 PM ISTUpdated : May 25, 2020, 02:37 PM IST
'ভগবান চমৎকার করছেন না', কোভিড-এর ভয়ে কি ধর্মে আস্থা হারালেন মোহন ভাগবত, জানুন আসল সত্য

সংক্ষিপ্ত

ভগবান কোনও চমৎকার করে দেখাচ্ছেন না কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তিনি ধর্মের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন এমনটাই নাকি বলেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত সত্যিই কি তাই নাকি খবরটি ভুয়ো  

তিনি আরএসএস অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের প্রধান। তাঁর হাতেই তৈরি হন ভবিষ্যতের নরেন্দ্র মোদী-রা। ঠিক হয় গেরুয়া শিবিরের নীতি। সেই মোহন ভাগবত-ই নাকি কোভিড -১৯ এর প্রাদুর্ভাবের কারণে ধর্মের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এমন এক খবরে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া।

বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেই একটি হিন্দি ভাষার দৈনিকের সংবাদপত্রের ক্লিপ শেয়ার করা হচ্ছে। সেই প্রতিবেদন অনুসারে, মোহন ভাগবত জানিয়েছেন, ভারতে করোনাভাইরাস মামলার সংখ্যা ২৫,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে (প্রতিবেদনটি কয়েকদিন আগেকার) এবং এর ফলে সমস্ত মন্দির এবং ধর্মীয় স্থান বন্ধ করে দেওয়া হয়ে গেছে। যে ভগবানের আমরা রোজ পুজো করি, তিনি কোনও চমৎকার করে দেখাচ্ছেন না। এমনকী আমাদের প্রধানমন্ত্রী মানুষদের মোমবাতি জ্বালানোর এবং থালা বাজানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি।

মোহন ভাগবতের নাম করে আরও বলা হয়েছে, করোনা তাঁকে বড় শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে। সেই শিক্ষা হল, এখন আমাদের ধর্মস্থানের নয়, স্কুল ও হাসপাতালের বেশি প্রয়োজন। পুরোহিতদের নয়, দরকার বৈজ্ঞানিকদের, ডাক্তারদের। কেননা, এখন শুধু ডাক্তার-নার্সরাই আমাদের রক্ষা করতে পারে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে মোহন ভাগবত দেশের সব পুরোহিতের কাছে আবেদন করেছেন, মন্দিরগুলি চিরতরে বন্ধ করে সেই জায়গায় স্কুল, বইয়ের দোকান, হাসপাতাল খুলতে। মন্দিরে যা সোনা-রুপো আছে, তা অভাবীদের মধ্যে বন্টন করে দিতে, যাতে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে পয়সার অভাব না হয়।

সোশ্য়াল মিডিয়ায় অনেকেই এই প্রতিবেদনের অংশটি শেয়ার করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন, 'এটা আজকের সবচেয়ে বড় সংবাদ। আরএসএস এবং মোহন ভাগবতের এই ভয় দেখে ভাল লাগছে। এই ভয় থাকা দরকার। আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত আরও ভাল হওয়া দরকার।' এই নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া পড়ে গিয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না, আরএসএস প্রধান কি এই কথা বলেছেন?    

এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা চালিয়েও এই সংবাদ প্রতিবেদনটি কোন হিন্দি দৈনিকের, তা খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। কাজেই এই ধরণের প্রতিবেদন সত্যিই প্রকাশিত হয়েছে কি না, তা যাচাই করা যায়নি। তবে প্রতিবেদনের কাগজের পাতাটির সঙ্গে তাঁর ছবিটির ব্রাইটননেস বা রঙের উজ্জ্বলতার তফাত রয়েছে, যা বেশ সন্দেহজনক। আর একমাত্র হেডলাইন ছাড়া অন্য কোথাও মোহন ভাগবতের নামও উল্লেখ করা হয়নি।  

এই খোঁজ করতে গিয়েই অবশ্য আরএসএস-এর পক্ষ থেকে এই প্রতিবেদন অস্বীকার করে দেওয়া একটি বিবৃতি পাওয়া গিয়েছে। গত ১৯ মে, সংঘের অখিল ভারতীয় সহ প্রচার প্রমুখ নরেন্দ্র কুমার এই সংবাদ প্রতিবেদনটি টুইট করে সঙ্গে লেখেন, ভাগবত কখনও এইরকম কোনও বক্তব্য দেননি। তাঁর নামে একটি মিথ্যা উক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে।

সেই সঙ্গে আরএসএস প্রধান ধর্মের আগে শিক্ষা বা স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, কিংবা পুরোহিতদের আগে ডাক্তার-বৈজ্ঞানিক-নার্স'দের প্রাধান্য দেবেন, এমনটা কখনই আশা করা যায় না। যদি না সত্যি সত্যি করোনার আতঙ্ক গ্রাস করে তাঁকে। কারণ গত ফেব্রুয়ারিতেই তিনি বলেছিলেন শিক্ষা ও সমৃদ্ধিই ভারতীয় পরিবারগুলিকে বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার বিরোধিতা করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী সোনম কাপুর। কাজেই সেই মোহন ভাগবত শিক্ষাকে ধর্মের আগে রাখবেন, এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। কাজেই এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে বিশদে যাচাই না করা গেলেও আরএসএস-এর বিবৃতি ও আরএসএস প্রধানের ট্র্যাক রেকর্ড অনুযায়ী বলা যায় এই খবরটি ভুয়ো।    

 

PREV
click me!

Recommended Stories

News Round Up: কলকাতায় পা রাখছেন মেসি থেকে শুরু করে শুভেন্দুর নিশানায় মমতা, সারাদিনের খবর এক ক্লিকে
জনগণনা ২০২৭: ৩০ লক্ষ কর্মী, ১১,৭১৮ কোটি টাকা বাজেট, বিশ্বের বৃহত্তম সমীক্ষা