চৌসা প্লান্ট শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। বুধবার কৃষক ও পুলিশের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। শত শত বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী প্ল্যান্টের প্রধান গেটে হামলা চালিয়ে তা ভাঙচুর করে।
বিহারের বক্সার জেলায়, পুলিশের তৎপরতায় বিক্ষুব্ধ লোকজন বেশ কয়েকটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। বক্সারের মানুষ পুলিশের বিরুদ্ধে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। পুলিশ কৃষকদের বাড়িতে ঢুকে অত্যাচার চালালে কৃষকরা ক্ষেপে যায় বলে অভিযোগ। বিক্ষুব্ধ কৃষকরা বহু গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। চৌসা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য সরকার কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করেছে। কৃষকরা তাদের জমির ন্যায্য দাম চায়। কৃষকরা বিক্ষোভ করছিল, সেই বিক্ষোভরত কৃষকদের ওপর পুলিশ নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ। এরপরেই বক্সার জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চৌসা প্লান্ট শুরু থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। বুধবার কৃষক ও পুলিশের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। শত শত বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী প্ল্যান্টের প্রধান গেটে হামলা চালিয়ে তা ভাঙচুর করে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকে তুমুল মারামারি শুরু করে। এই ঘটনার পর গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পুলিশ জানায়, কোম্পানিটি বক্সার জেলার চৌসায় নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছিল। এই অধিগ্রহণের জন্য কৃষকরা তাদের জমির যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। গত বছরের অক্টোবর থেকে গ্রামবাসী শান্তিপূর্ণভাবে ধর্নায় বসেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে, পুলিশের একটি দল বানারপুর গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি মহিলাদেরও রেহাই দেয়নি পুলিশ। এখন এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সকালে প্রকল্প সাইটের গেটে হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধ কৃষকরা গেটে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। বক্সারের মহকুমা পুলিশ অফিসার গোরখ রাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশের শূণ্যে গুলি
উদ্ধারে প্ল্যান্টের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশ শূণ্যে গুলি চালায়। তবে এ সময় বাইরে থেকে কোনো পুলিশ বাহিনী পৌঁছাতে পারেনি। কৃষকরা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার দেড় ঘণ্টা পর বাইরে থেকে পুলিশ বাহিনী আসতে শুরু করে। ডিএম আমান সমীর, এসপি মনীশ কুমার এবং বক্সার জেলার সমস্ত ঊর্ধ্বতন পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। ডিআইজি নবীন চন্দ্র ঝাও বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্ল্যান্টে পৌঁছান। জেলার সব থানা থেকে পুলিশ ডেকে এখানে মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ লাইন থেকে ফোর্সও ডাকা হয়েছে। আগুন নেভানোর জন্য গোটা এলাকায় দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন করা হয়েছে। তিন ঘণ্টার চেষ্টার পরেও অনেক জায়গায় ধোঁয়া উঠছে। ভিতরে কোন বড় ক্ষতি নেই। পুলিশ কয়েকজন কৃষককে আটক করেছে। এখানে প্ল্যান্টের ভেতরে কর্মরত শ্রমিকরা ভয়ে পালিয়ে গেছে। এখন ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুলিশি তৎপরতায় আতঙ্কিত আশপাশের গ্রামের মানুষ। সারাদিন চৌসা বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল।
পুলিশ বাড়িতে ঢুকে কৃষকদের মারধর করে
আসলে, চৌসার কাছে নির্মিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে সম্পর্কিত জল সরবরাহ পাইপলাইন এবং রেললাইনের জন্য জমি অধিগ্রহণের ইস্যুতে কৃষকরা বিক্ষোভ করছিলেন। এর প্রতিবাদে কৃষকরা নির্মাণাধীন পাওয়ার হাউসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। প্রশাসন তখন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলেও রাত নামার সাথে সাথে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে পৌঁছে যায়। এ সময় পুলিশ অনেক কৃষকের বাড়িতে ঢুকে নির্দয়ভাবে মারধর করে। পুলিশ ভ্যানেও আগুন দিয়েছে কৃষকরা।
কৃষকদের মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে
কৃষকদের সঙ্গে মারামারির ভিডিওও ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কৃষকদের দাবি, মধ্যরাতের পর বনরপুরসহ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের কৃষকদের বাড়িতে পুলিশ পৌঁছেছে। এ সময় পুলিশ জোর করে বাড়িতে ঢুকে কৃষকদের মারধর করে। তবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি।