হিন্দুদের না জানিয়ে বিরিয়ানি পরিবেশনের অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের মাহোবায় ২৩ জন মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হল। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্মের ভিত্তিতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগকারীরা হলফনামা দিয়ে মামলা তুলে নিতে চেয়েছিল, কিন্তু স্থানীয় বিজেপি বিধায়কই জোর করে তাঁদের দিয়ে এফআইআর দায়ের করান।
ঘটনাটি ঘটেছে মাহোবার চারখরি থানা এলাকার সালাত গ্রামে। গত ৩১ অগাস্ট এই এসাকায় মুসলিমদের উরস পরব উপলক্ষে গত ছয় বছর ধরেই স্থানীয় মাজারে বড় ভান্ডার বা খাওয়া-দাওয়া হয়। সেখানে আশপাশের ১৩টি গ্রাম থেকে প্রায় হাজার দশেক মানুষ অংশ নেন। হিন্দুরাও আমন্ত্রিত থাকেন। অন্যান্য বছর নিরামিষ খাদ্য পরিবেশন করা হলেও, এই বছর বিরিয়ানি থেকে ভাত তুলে হিন্দুদের দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
খাওয়া শুরু করার পরই ভাতের মধ্যে মাংস এবং হাড় পাওয়া যায়। তারপরই সেখানে পঞ্চায়েত বসানো হয়। পঞ্চায়েতের সামনে মূল অভিযুক্ত স্বীকার করে নেন, ওই ভাত মোষের মাংস দিয়ে তৈরি বিরিয়ানি থেকেই তুবলে দেওযা হয়েছে। এরপর তিনি 'শুদ্ধিকরণ' -এর জন্য ৫০০০০ টাকাও দিতে রাজি হন। অধিকাংশই এই সমাধান মেনে নিলেও, কয়েকজন খবর দেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক ব্রিজভূষণ রাজপূতকে।
এরপরই ওই গ্রামবাসীদের ব্রিজভূষণ জোর করে মূল অভিযুক্ত ও আরও ২২ জন মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। বস্তুত অভিযোগকারী হিসেবে নাম থাকা এক গ্রামবাসীর দাবি কাগজে কী লেখা আছে, তা তাঁদের না জানিয়েই জোর করে সই করিয়ে নেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন পাপ্পু আনসারি নামে এক ব্যক্তি তাঁর ভাগনের শরীর সেড় গেলে বিরিয়ানি খাওয়াবেন। সেই মতোই আয়োজন করা হয়েছিল। তিনিই না জানিয়ে আমিষ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে দোষী। অভিযোগপত্রে নাম থাকা বাকি ২২ জনই নিরপরাধ বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
পুলিশও জানিয়েছে এই নিয়ে গত ৩১ অগাস্টের রাতে ঝামেলা বেধেছিল ঠিকই, কিন্তু তারা যাওয়ার পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে বিজেপি বিধায়ক রাজপুত ফের তা খুঁচিয়ে তুলেছেন।