বৃদ্ধ সাথে দম্পতির এক ছেলে শহিদ হয়েছিলেন জম্মুতে, আরেক ছেলে সহযাত্রীদের বাঁচাতে দিলেন নিজের প্রাণ

  • ক্যাপ্টেন দীপক সাথের বাবাও ছিলেন সেনা বাহিনীতে
  • বৃদ্ধ সাথে দম্পতি বড়ো ছেলেকে হারিয়েছিলেন মাত্র ২২ বছর বয়সে
  • এবার ছোট ছেলেও চলে গেলেন  জীবনের ওপারে
  • ছোটবেলা থেকেই পরোপকারী ছিলেন  উইং কমান্ডার দীপক বসন্ত সাথে

ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমির প্রাক্তন ছাত্র উইং কমান্ডার দীপক বসন্ত সাথে একসময় ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানও চালিয়েছিলেন।  তাই বোয়িং ৭৩৭ বিমান ওড়ানো একেবারে জলভাত ছিল তাঁর কাছে। কিন্তু তবু ঘটে গেল দুর্ঘটনা। শুক্রবার সন্ধেয় কেরলের কোঝিকোড়েতে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে ভেঙে দু'টুকরো হয়ে যায় এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের বিমানটি। তবে প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত বিমানটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন পাইলট ক্যাপ্টেন দীপক সাথে। এমনকি ভেঙে পড়ার আগে বোয়িং ৭৩৭ এনজি দু'বার  এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করারও চেষ্টা করেছিল।

আরও পড়ুন: ১৯৯০ তেও বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন, কিন্তু মনের জোড়ে ফিরে এসেছিলেন উইং কমান্ডার দীপক সাথে

Latest Videos

নিজে শহিদ হলেও বিমানের অন্যান্য যাত্রীদের প্রাণ বাঁচিয়ে রেখে গেলেন দীপক সাথে। ১৯১ জন যাত্রী বিমান থাকলেও সাথে সহ মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। বাকিদের অবস্থা স্থিতিশালী বলেই জানা যাচ্ছে। ছেলে সবসময় পরোপকারী ছিল। মানুষের বিপদ দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়ত। স্মৃচিতারণ করতে গিয়ে জানালেন দীপক সাথের বৃদ্ধা মা। চোখের জল কিছুতেই বাঁঝ মানছে না নীলা সাথের। জানান, আহমেদাবাদে বন্যার সময় কীভাবে শিশুদের বাঁচিয়ে ছিলেন বায়ু সেনার এই প্রাক্তন আধিকারিক। 

আরও পড়ুন: উদ্ধার বিমানের ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার, ভেঙে পড়ার আগে বারবার আকাশে চক্কর

দুই সন্তানকেই হারালেন বৃদ্ধ সাথে দম্পতি। নাগপুরের বাড়ি জুড়ে এখন হতাশা। জম্মুতে শহিদ হয়েছিলেন এক ছেলে। এবার সহযাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে নিজেকে বলি দিলেন আরেক ছেলে। সেনার প্রাক্তন কর্ণেল বসন্ত সাথে আর তাঁর স্ত্রী নীলা সাথে আজ গর্বিত দুই ছেলের এই আত্মত্যাগের জন্য।

নীলাদেবী জানান, কয়েতদিন আগেই ছেলে দীপকের সঙ্গে কথা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে মা যেন বাড়ির বাইরে না যান, সেকথ বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন ছেলে। সেটাই যে ছোট ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হবে তা ভাবতেও পারেননি নীলা সাথে।  

২০ বছর ধরে দেশের সেবা করেছিলেন বসন্ত সাথে। দুই ছেলেই তাঁর পথ অনুসরণ করেছিলেন। সাথে দম্পতি বড় ছেলেক হারিয়েছিলেন মাত্র ২২ বছর বয়সে। তারপর থেকে ছোট ছেলেক আকড়েই বেঁচে ছিলেন দু'জনে। বৃদ্ধ বাবা, মা ছাড়াও স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে রেখে গেলেন দীপক সাথে। তাঁর দুই ছেলেই আইআইটি বোম্বে থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন। 

 

 

বাবা, মা নাগপুরে থাকলেও গত ১৫ বছর হল মুম্বইয়ে চাণ্ডেভালির নাহার অমৃত শক্তি হাউজিংয়ে থাকতেন দীপক। পাড়া, প্রতিবেশীরা সকলেই মুগ্ধ ছিলেন তাঁর সুমিষ্ট ব্যবহারে। তাঁর স্ত্রী এবং বড় সন্তান ইতিমধ্যে কোঝিকোড়ে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁর বড় ছেলে বেঙ্গালুরুতে থাকলেও ছোট ছেলে মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিও দেশের পথে রওনা দিয়েছেন।

 

 

শুক্রবার রাতে কোঝিকোড়ে ক্যাপ্টেন সাথের সঙ্গে  মৃত্যু হয়েছে সহ পাইলট ক্যাপটেন অখিলেশ কুমারেরও। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বিয়ে করেছিলেন অখিলেশ। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পৃথিবীতে আসতে চলেছে কুমার দম্পতির প্রথম সন্তান। ২০১৭ সালেই এয়ার ইন্ডিয়াতে যোগ দেন অখিলেশ। লকডাউনের আগে শেষবার বাড়িতে এসেছিলেন। 


 

Share this article
click me!

Latest Videos

হঠাৎ করে TMC নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে কেন? কী উদ্দেশ্যে? প্রশ্ন অগ্নিমিত্রার | Agnimitra Paul
Naihati-তে কার পাল্লা ভারী? ফল ঘোষণার আগে উত্তেজনা তুঙ্গে গোটা এলাকায় | Naihati By Election Results
ট্যাব কেলেঙ্কারির প্রতিবাদে শিক্ষকদের জোরদার বিক্ষোভ! দাবি সঠিক তদন্তের! | Bengal Tab Scam
'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের (TMC) পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
Bear Rescue Operation | বরফের মধ্যে ভাল্লুকের প্রান বাঁচাল ভারতীয় সেনা, দেখুন দুঃসাহসিক ভিডিও