দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথমবারের জন্যে ১৫ আগস্ট লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ একেবারে সরাসরি সম্প্রচার দেখতে পাবেন উত্তর কাশ্মীরে ভারত-পাক সীমান্তের শেষ গ্রাম কেরানের বাসিন্দারা৷ অবাক শোনালেও এই ঘটনা একেবারে সত্যি। স্বাধীনতার ৭৩ বছরে এমন দিন আগে দেখার সুযোগ হয়নি উত্তর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারতের সীমান্তের শেষ গ্রামটির। তবে ৭ দশক পর স্বাধীনতা দিবসের প্রকৃত স্বাদ পেতে চলেছে কেরানের মানুষ।
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভারত স্বাধীন হওয়ার ৭২ বছর পর্যন্ত কেরান গ্রামে আলো জ্বলেনি। তবে একটা সময় শুধু গ্রামবাসীরা বিদ্যুতের আলোয় নিজের পরিবারের সদস্যদের দেখতে পেতো। সেটি সময়ও ছিল নির্দিষ্ট করা, মাত্র ৩ ঘণ্টা, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। কারণ এই ৩ ঘন্টা জেনারেটরের সাহায্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো গ্রামের ১২ হাজার পরিবারের ঘরে।
তবে এবার সব অন্ধকারের অবিসান হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ফলে এই প্রথমবার লালকেল্লা থেকে ভাষণের সেই রক্ত উথলে ওঠা ভাষণ শুনবেন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন: খরস্রোতা নদীতে পা পিছলে পড়ে গেলেন বিধায়ক, তারপর কী হল জানেত দেখুন রোমহর্ষক সেই ভিডিও
কুপওয়ারার জেলা শাসক অনশূল গর্গ জানিয়েছেন, ‘গত এক বছর ধরে আমরা প্রায় যুদ্ধকালীন তত্পরতায় এই এলাকায় বিদ্যুত্ সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। অবশেষে সেই লক্ষ্যে সফল হয়েছি।’ এখন ২৪ ঘন্টাই আলো পৌঁছায় কেরান গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে।
তবে শুধু বিদ্যুত্ নয়, এই অঞ্চলে রাস্তা তৈরির কাজও শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কিষণ গঙ্গা নদীর কিনারায় অবস্থিত কেরান গ্রাম বছরের ৬ মাস কুপওয়ারা জেলার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে প্রবল শীত ও তুষারপাতের কারণে। তবে চলতি বছর বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। শীত পড়ার আগেই ম্যাকাডেমাইসড রাস্তা তৈরির কাজ শেষ করতে হবে।
গোটা কুপওয়ারা জেলা ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৭০ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণরেখা রয়েছে৷ এই পথে প্রচুর অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটে৷ জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই কুপওয়ারা জেলায় মোট ৩৫৬টি পঞ্চায়েত রয়েছে এবং পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র আছে। তবে সব নির্বাচনেই কুপওয়ারার পাঁচটি বিধানসভা এবং ৩৫৬টি পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটদানের হার যথেষ্ট বেশি থাকে৷
জম্মু- কাশ্মীর প্রশাসনের দাবি, গত বছর কেন্দ্রশাসিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অনুন্নত এবং দুর্গম এলাকাগুলিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের বিপুল কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে কাশ্মীরে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইতিমধ্যে ৫৯৭৯ কোটি টাকা মূল্যের ২২৭৩টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ৫০৬টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে, বাকি ৯৬৩টি প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ ২০২১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।