দিল্লির উপকণ্ঠে চলা কৃষক আন্দোলন ক্রমশই জোরদার হচ্ছে। আর আন্দোলন প্রতিহত করতে কিছুটা হলেও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে পপস্টার রিহানা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মী গ্রেফটা থুনবার্গের মন্তব্য আরও অস্বস্তি বাড়িয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের। প্রায় দুমাসেরও বেশি সময় ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মুখ খুলেছেন দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। যা নিয়ে রীতিমত ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। তবে কৃষক আন্দোলন নিয়ে বিদেশী সেলিব্রিটিদের মন্তব্যকে দুর্ভাগ্যজনক বলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
গতকাল সন্ধ্যায় পপ আইকন রিহানা তাঁর ১০০ মিলিয়ন অনুগামীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন তারা কৃষক আন্দোলন নিয়ে কথা বলছি না। সঙ্গে তিনি একটি প্রতিবেদনও জুড়ে দিয়েছিলেন, যেখানে প্রতিবাদ কেন্দ্রগুলিতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছিল। জলবায়ু আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত গ্রেটা থুনবার্গও কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। তবে রিহানার মন্তব্যের পরই ভারতের কৃষক আন্দোলন বিশ্বের দরবারে একটা জায়গা করে নিয়েছে।
রিহানার সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়েছেন কমল্যা হ্যারিসের ভাগ্নি মীনা হ্যারিস। একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও আন্দোলনকারী কৃষকদের পাসে থাকার বার্তা দিয়েছেনয়। এই পর্বে আসনে নামেন ভারতের অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। রিহানার পোস্টের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, কেউ এসব নিয়ে কথা বলছে না কারণ ওরা কৃষক নয় জঙ্গি। যারা দেশ ভাগ করতে চাইছে। যাতে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া আমাদের দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে চিন। চিন সেখানে উপনিবেশও তৈরি করতে পারে। কঙ্গনার ওই পোস্ট ঘিরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়।
দিল্লির উপকণ্ঠে চলা কৃষক আন্দোলন নিয়ে সেলিব্রিটিদের সোশ্যাল মিডিয়ায় বাকযুদ্ধের মধ্যেই আসরে নামে বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্ত সোশ্যাস মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে একটি পোস্ট করেন। তিনি বলেন, এজাতীয় বিষয়ে মন্তব্য করার আগে সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ। সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাসট্যাগ বা মন্তব্যের প্রলোভনের জন্য এজাতীয় সংবেদনশীল বিষয়ে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কিন্তু, কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার আইনকে আরও ন্যায় সংগত করা হয়েছে। যাথাযত প্রক্রিয়ার শেষে সংসদে তা পাশ করা হয়েছিল। কৃষকদের কল্যাণে জন্যই তা করা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। ভারতের কিছু অংশের কৃষকরাই এই আন্দোলনের প্রতিবাদ করছেন। প্রতিবাদীদের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে ভারত সরকার তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে। প্রধানমনম্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমস্যা সমাধান না হওয়ার পর্যন্ত কৃষি আইন স্থগিত রাখার কথাও বলেছেন। তাই এই সময় এজাতীয় মন্তব্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলেও জানান হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে।