নজরে ফের দিল্লি হিংসা, গভীর রাতে ইউএপিএ আইনে গ্রেফতার জেএনইউ-এর ছাত্রনেতা উমর খালিদ

  • দিল্লির হিংসায় জড়িত থাকার আভিযোগে ধৃত উমর খালিদ
  •  জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতাকে গভীর রাতে গ্রেফতার
  • বেশ কিছু দিন ধরেই দিল্লি পুলিশের নজরে ছিলেন উমর খালিদ
  • এর আগে গত দু'মাসে উমরকে দু'বার জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ

Asianet News Bangla | Published : Sep 14, 2020 3:33 AM IST / Updated: Sep 14 2020, 09:05 AM IST

চলতি বছরের শুরুতেই । সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। রাজধানী দিল্লিতেও দেখা দিয়েছিল প্রতিবাদের আগুন। তার চরম পরিণতি ছিল ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে দাঙ্গা। যার বলি হয়ে হয় পঞ্চাশের বেশি মানুষকে।  আহত হয়েছিলেন ৪০০ জনের মতো মানুষ। এই হিংসার ঘটনায় এবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সদস্য উমর খালিদকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে দিল্লি পুলিশের বিশেষ দল জেএনইউ-এর এই প্রাক্তন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে।

 দিল্লি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, দিল্লিতে ধারাবাহিক হিংসার ঘটনায় উমর খালিদ ছিলেন অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী। রাজধানীর পুলিশের আরও বক্তব্য, হিংসার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত আম আদমি পার্টির বহিষ্কৃত কাউন্সিলর তাহির হুসেনের সঙ্গেও প্রত্যক্ষ যোগ ছিল উমর খালিদের। হিংসাকে আরও বাড়াতে দু’জনে মিলে শলাপরামর্শ করেছিল। ইতিমধ্যে গত ৩ আগস্ট তাহির জেরায় দাঙ্গায় নিজের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: সর্বদল বৈঠক ছাড়াই শুরু বাদল অধিবেশন, ১৮ দিনের কর্মকাণ্ডে বিরোধীদের সামলে ১১টি বিল পাশ করানোই লক্ষ্য মোদীর

উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের  ঘটনায় উমরকে অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।  বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মামলা দায়ের হয়েছে।

শাহিন বাগের বিক্ষোভ মঞ্চে ভাষণ দেওয়া নিয়ে গত দু'মাসে উমর খালিদকে দু'বার জেরা করেন দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্রনেতাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সকাল থেকে টানা ১১ ঘণ্টা জেরার পর, রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।

আরও পড়ুন: মহামারির মধ্যে নিজের বাড়ির স্বপ্নপূরণ, ১৭ লক্ষ দরিদ্র পরিবারের ‘গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে’সামিল প্রধানমন্ত্রী

দিল্লি হিংসার ঘটনায় গত ৬ মার্চ প্রথম উমর খালিদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। তাতে অভিযোগ রয়েছে, উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকাকালীন রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাতে দিল্লিবাসীকে ইন্ধন জোগান উমরই।  যাতে  ভারতে সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করা হচ্ছে, এমন বার্তা আন্তর্জাতিক মহলে পৌঁছে দেওয়া যায়।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ২০১৬ সালেও উমর খালিদ এক বার দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। সেই বার জেএনইউ-র ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে ভারত বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। সেই মামলায় নাম জড়িয়েছিল জওহারলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া কুমার, অনির্বাণ ভট্টাচার্য-সহ দশজন জেএনইউ পড়ুয়ার। ওই মামলায়  তিন বছর পরে ২০১৯ সালে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট পেশ করে।

যদিও দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে পুলিশের আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উমর। ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি উমরের। গত ৪ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমে উমর অভিযোগ করেন, দেশে এই মুহূর্তে দু’ধরনে আইন চলছে। শাসক দলের সমর্থকদের জন্য একটি, অন্যটি যাঁরা সরকারের সমালোচনা করেন  তাঁদের জন্য।

এদিকে রবিবারই জানা গিয়েছে  দিল্লি হিংসা মামলার সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিটে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরির নামও এবার  যুক্ত করা হয়েছে। শুধু সীতারাম নন, সেই তালিকায় রয়েছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক জয়তী ঘোষ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ ও স্বরাজ অভিযানের নেতা যোগেন্দ্র যাদবের নামও।

Share this article
click me!