তিহারে খুলতো মদের বোতল! আসতেন এয়ার হোস্টেসরা! ভিআইপি সুবিধার পর্দা ফাঁস করলেন প্রাক্তন আধিকারিক

তিহার জেলে ভিআইপি সুবিধা এবং অবৈধ কাজের অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন জেল প্রো সুনীল কুমার গুপ্ত। অভিযোগ, কেজরিওয়াল এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে বিষয়টি জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। 

তিহার জেল, যেই কারাগারের নাম শুনলে দুঁদে আসামীদেরও চোখ জল চলে আসে, সেই জেলের অন্দরেই দিনের পর দিন চলে অবৈধ কাজ। এমনটাই জানিয়েছেন তিহারের প্রাক্তন জেল প্রো সুনীল কুমার গুপ্তা।

কারাগারে সুব্রতা রায় ভিআইপি সুবিধা এবং অবৈধ কাজের সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রাক্তন জেল প্রো সুনীল কুমার গুপ্ত একটি বড় খবর প্রকাশ করেছেন।

তিনি কারাগারে ভিআইপি আসামীর বেআইনি সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন এএপি নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দিল্লি লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল তবে কেউ পদক্ষেপ নেননি। 

সুনীল কুমার গুপ্তা দাবি করেছিলেন যে সুব্রতা রায়কে কেবল তিহার কারাগারে বিশেষ সুযোগসুবিধা দেওয়া হয়নি, ছিল হুইস্কির বোতলও ছিল। কেবল তাই নয়, সাহারা এয়ারলাইন্সের এয়ার হোস্টেসরাও কয়েক ঘন্টার জন্য তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন।

প্রাক্তন প্রো এর অভিযোগ কী?

প্রাক্তন তিহার কারাগারের প্রো সুনীল কুমার গুপ্ত একটি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন যে তিনি প্রথমে তৎকালীন ডিজি (কারাগারের) কাছে এ ই সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন তবে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারপরে তিনি তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করলেন এবং পুরো পরিস্থিতি তাকে বলেছিলেন।

সুনীল কুমার গুপ্তের মতে, সুব্রতা রায়কে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, তবে এগুলি বাদে তাকে অবৈধ সুযোগ -সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। সাহারা এয়ারলাইন্সের এয়ার হোস্টেস তাঁর সাথে দেখা করতে এবং কয়েক ঘন্টা তাঁর সাথে থাকতেন। হুইস্কির বোতলও কারাগারে উপস্থিত ছিল। কারাগার প্রশাসন পুরোপুরি সুব্রতা রায়ের সামনে মাথা নত করে ছিল।

কেন কেজরিওয়াল পদক্ষেপ নেননি?

সুনীল কুমার গুপ্ত বলেছিলেন যে তিনি যখন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন, তখন কেজরিওয়াল তাকে এটির একটি ভিডিও তৈরি করতে বলেছিলেন। গুপ্ত বলেছিলেন যে ভিডিও তৈরি করা তার পক্ষে সঠিক হবে না, তবে গিয়ে নিজেই এটি পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। 

কেজরিওয়াল জবাব দিয়েছিল যে ডিজি (কারাগার) একজন আইপিএস অফিসার এবং তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পড়েছেন, সুতরাং তার বিরুদ্ধে কিছু করা কঠিন হবে। যদি এই অভিযানে সবকিছু সঠিক বলে মনে হয় তবে কারাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে দু'দিন পরে, ডিজি গুপ্তকে ফোন করে বলেছিলেন যে এটি ভুল ছিল 'আপনি একজন 'দরিদ্র মানুষ' কে ফাঁসিয়ে দিলেন।'

প্রো সুনীল কুমার গুপ্ত লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেছেন তবে শুনছেন না

সুনীল কুমার গুপ্ত বলেছিলেন যে তিনি যখন বারবার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন, তখন জেল প্রশাসন তাকে হয়রানি করতে শুরু করে। তিনি এলজি (লেফটেন্যান্ট গভর্নর) এর সাথেও সাক্ষাত করেছিলেন তবে কোনও শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। তিনিও কোনও পদক্ষেপ নেননি।

অবসর গ্রহণের বিষয়ে চার্জশিট কিন্তু পরে সরকার প্রত্যাহার করে নেয়

অবসর গ্রহণের সময়, তাকে ১০-বয়সের কোর্সের সঙ্গে সম্পর্কিত অনিয়মের কথা উল্লেখ করে একটি ১৫ -পৃষ্ঠার চার্জ শিট দেওয়া হয়েছিল। চার-পাঁচ বছর পরে, সরকার চার্জশিটটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল তবে এই সময়ে তিনি খুব মন খারাপ করেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশ সত্ত্বেও অবৈধ সুবিধা

সুনীল কুমার গুপ্ত বলেছিলেন যে সুপ্রিম কোর্ট সুব্রতা রায়কে কারাগারে ভিডিও কনফারেন্সিং সুবিধাগুলি সরবরাহ করার অনুমতি দিয়েছে যাতে তাদের হোটেল বিক্রয়ের জন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলতে পারে।

কারাগার প্রশাসন এর আগে বলেছিল যে এটি কারাগারের অভ্যন্তরে সম্ভব নয়, তবে পরে এই সুবিধাটি আদালত প্রাঙ্গণে দেওয়া হয়েছিল।