একে শুক্রবার, তার উপর ১৩ তারিখ। সব মিলিয়ে এই দিনটিতে ভূত-প্রেতদের দাপট বাড়ে বলেই শোনা যায়। আর এমন দিনই তো ভারতের অন্যতম প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেটর গৌরব তিওয়ারিকে চিনে নেওয়ার আদর্শ দিন। সহজ বাংলায় বললে ভূত-প্রেত খুঁজে বেড়াতেন গৌরব তিওয়ারি। তাঁর মৃত্যুও হয় খুবই রহস্যজনকভাবে।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই দিল্লির ফ্ল্যাটে জীবাবসান হয়েছিল গৌরবের। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মৃত্যুর সময় বাথরুমে ছিলেন তিনি। হঠাৎ বাইরে থেকে একটা জোরালো শব্দ পাওয়া গিয়েছিল। দরজা ভেঙে ঢুকে গৌরবকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
ব্যক্তিগত জীবন বা পেশাদার জীবনে তাঁর কোনও সমস্যা ছিল না। তবে তাঁর স্ত্রী পরে দাবি করেন, এক পাপাত্মা তাঁর জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিল। সেই নিয়ে বেশ চাপে ছিলেন গৌরব। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি। ঘাড়ের কাছে একটা কালো দাগও মিলেছিল।
গৌরবের মৃত্যু রহস্য শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়নি। তবে তাঁর সারা জীবনটাও ছিল রহস্যাবৃত। প্রথম জীবনে তিনি বিমান চালক ছিলেন। তবে বরাবরই ভূত-প্রেত অতিপ্রাকৃত বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল। একটা সময় চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ভূত খোঁজাতেই মন দিয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি ইন্ডিয়ান প্যারানর্মাল সোসাইটি গড়ে তোলেন। তারপর থেকে অন্তত ৬০০০ ভুতুরে জায়গায় তিনি অনুসন্ধান চালিয়েছেন অতিপ্রাকৃত বিষয় নিয়ে।
ক্রমে এই ক্ষেত্রে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন গৌরব। আমেরিকার প্যারানেক্সাস অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে অতিপ্রাকৃতিক জগতে তাঁর অবদানের জন্য পুরষ্কৃত করেছিল। আবার মেটাফিজিকাল চার্চ অব হিউম্যানিস্টিক সায়েন্স তাঁকে মিনিস্টার পদ দিয়েছিল। 'হন্টিং অস্ট্রেলিয়া', 'এমটিভি গার্লস নাইটআউট', 'হন্টেড উইকএন্ড উইথ সানি লিওন', 'ভূত আয়া', 'ফিয়ার ফাইলস'- এর মতো টিভি শো-তেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল।
২০১৬ সালে তিনি আর্য কাশ্যপকে বিবাহ করেছিলেন গৌরব। বিয়ের পর ধীরে ধীরে কাজের চাপ কমাচ্ছিলেন গৌরব। এমনকী ভূত খোঁজা ছেড়ে দেবেন বলেই ঠিক করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই পরলোক তাঁকে খুঁজে নেয়।