G-20 Summit: জি-২০ ভারতকে বিশ্ব রাজনীতি আর অর্থনীতিতে অনেকটাই এগিয়ে দেবে

আজ ভারত তার শক্তিশালী মধ্যবিত্তের সঙ্গে বিশ্ব নেতৃত্বের দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত। শত্তির ভারসাম্য দ্রুত গ্লোবাল সাউথের দিকে ঝুঁকছে। এমন একটি অঞ্চল যেখানে ভারত একটি নেতৃত্বস্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

 

ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির গ্র্যান্ড ফিনালেতে শীর্ষ বিশ্বনেতাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ভারত শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারত 'এক পৃথিবী এক পরিবার এক ভবিষ্যৎ'এর থিমকে বাসুধৈব কুটুম্বকমের মিলিয়ে দিতে পেরেছে। এটি এমন একটি ধারনা যা বিশ্বকে একটি উন্নত ভবিষ্যতের পথ দেখাতে পারবে। তেমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এটি অত্যান্ত সফল জি-২০ প্রেসিডেন্সির বারকে উঁচু করে তুলেছে। সমস্ত সূক্ষ্ম পরিকল্পনা ও এই সুযোগের কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারত প্রজেক্ট করতে সক্ষম হয়েছে, এটি আর সাপের বা রমণীদের দেশ নয়। আগে ভারতকে এভাবেই বিচার করা হয়।

Latest Videos

আজ ভারত তার শক্তিশালী মধ্যবিত্তের সঙ্গে বিশ্ব নেতৃত্বের দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত। শত্তির ভারসাম্য দ্রুত গ্লোবাল সাউথের দিকে ঝুঁকছে। এমন একটি অঞ্চল যেখানে ভারত একটি নেতৃত্বস্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

জি-২০ হল অনেত ভাল জিনিসের সূচনা, যদি ভারত বৃদ্ধির গতিপথ ধরে রাখে। নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করে, যে কোনও বাধাকে কৌশলে পরিচালনা করে।

২০ শতকে অসাধারণ অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছিল, কিন্তু পশ্চিমের কিছু দেশের অহংকার বিস্ফোরিত হয়েছিল। দুটি বিশ্বযুদ্ধের ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘরে। বিশ্ব ব্যবস্থায় চূড়ান্ত উত্তেজনা দেখা দেয়। পশ্চিমের অর্থনীতি এখন মন্দার দিকে যাচ্ছে। অতীত থেকে এই শিক্ষা নেওয়া জরুরু।

শীর্ষস্থানীয় বিশ্ব অর্থনীতিবিদদের অনুমান অনুসারে ভারত তার গৌরবময় অতীত পুনরুদ্ধার করতে বাধ্য। এটি তখনই সম্ভব যখন ভারতীয়রা ঐক্যবদ্ধ থাকে। শুধুমাত্র উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশন করে। যদি এটি কার্যকর হয় তাহলে ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতি বিশ্বনেতা হওয়া থেকে কিছুতেই আটকানো যাবে না।

বিশ্ব পরিস্থিতির অধ্যয়নের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে আজ আমরা বিশ্বের সবথেকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সময়ে বাস করছি। আমরা সবথেকে স্বাস্থ্যকর ও ধনী দেশে বাস করছি।

আমাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের জীবনকালও বেড়ে। আমাদের মধ্যে বেশিরভারই ২০৪৭ দেখতে বেঁচে থাকব। সেই প্রতিশ্রুতিশীল বছর যখন অনুমান অনুসারে ভারত শীর্ষ তিনটি বিশ্ব শক্তির মধ্যে থাকবে। বাকি দুটি হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন।

আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিপথ সবথেকে অনুকূল। একইভাবে দেশকে শক্তিশালী করার জন্য ভারতীয় মূল্যবোধ ও শর্তগুলিও প্রয়োজনীয়। আমাদের প্রতিবেশী চিনের বার্ধক্য প্রজন্মের বিপরীতে আমাদের একটি তরুণ প্রজন্মের কর্মশক্তি প্রস্তুত রয়েছে।

চিনের একটি বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এটি আরও দশ বছর বিশ্ব তার পেসী নমনীয় করতে থাকবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নেতৃত্বের এই খেলায় ভারতের পক্ষে আরও থাকবে তুরুপের তাশ। এগুলি হামিশ ম্যাক্রের মতো নেতৃত্বস্থানীয় ও স্বাধীন অর্থনৈকিক সাংবাদিকের অনুমান।

স্টিফেন পিঙ্কার, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানের কানাডিয়ান অধ্যাপক তার ২০১১ বই দ্য বেটার অ্যাঙ্গেলস অফ আওয়ার নেচারে লিখেছেন যে বিশ্বে হিংসা হ্রাস পেয়েছে। মানুষ একে অপরের সাথে ভাল আচরণ করছে - তারা আরও দয়ালু, এবং আরও সহযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে - মানব প্রজাতির ইতিহাসে আগের চেয়ে।সম্ভবত এটি সংবাদ মাধ্যমের আমাদের বর্ধিত অ্যাক্সেস এবং ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত। ভাল খবর কোন খবর নয়, যেখানে খারাপ খবর। মানুষ হতাশা কেনে। আমরা যারা সাফল্যের গল্পগুলিতে ফোকাস করি তারা বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য উপহাসিত হই। তবে এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে যদি আমরা একটি ভাল ভবিষ্যতের জন্য চাই।

লোকেরা তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য তাদের নিজস্ব মতামতের প্রতি সহনশীলতা কমে গেছে। আমরা হয়ত আগের প্রজন্মের তুলনায় বিদ্বেষের জন্য কম সহনশীলতার মাত্রা তৈরি করেছি। তবে এটি খারাপ নয়।

সামাজিক মাধ্যম ও প্রচলিত মিডিয়া অনেক সময়ই আমাদের বিভ্রান্ত করে। সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া পশ্চিমের নিয়ন্ত্রণে। ভারতকে তথ্যের মাধ্যমে যাচাই করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবেয যা প্রায়ই বিভ্রান্তিকর হতে পারে।

আমাদের ইতিহাসে একটি মধ্যবিত্ত বিশ্বের আগে কখনও অস্তিত্ব ছিল না। অনুমানগুলি দেখায় যে ভবিষ্যত মধ্যবিত্তদের দ্বারা প্রভাবিত হবে, ধনী ব্যক্তিদের দ্বারা নয়। সমাজের বয়স এবং সম্পদ এবং জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে লোকেরা তাদের দৈনন্দিন চাহিদার প্রতি কম মনোযোগ দিতে পারে এবং তাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে।

জাতীয়তাবাদের অনুভূতিকে ইতিবাচকভাবে নেভিগেট করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য কোনো বিশেষ ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য না দিয়ে উন্নয়নে পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। ভারতকে তার সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্ভাব্য সমস্ত ঘর্ষণ পয়েন্ট কমাতে হবে।

যদিও দেশটি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ও সর্বাধিক জনবহুল দেশের জন্য অবকাঠামো শিক্ষার সুযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা তৈরিতে অনেক দূর এগিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য় অর্জনের জন্য আরও অনেক কিছু করতে হবে।

ভারতীয় জাতি-রাষ্ট্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে। তারপর জওহরলাল নেহরু স্বাধীন ভারত তৈরিতে মনোনিবেশ করেন। পরবর্তীকালে তাঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় দৃঢ় নেত্রী হয়ে ওঠেন। তাঁকে হত্যার পর তাঁর ছেলে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কম্পিউটারাইজেশনে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি টেলিকম বিপ্লবের সূচনা করেছিল।

তারপর ১৯৯১ সালে পিভি নরসীমা রাও ও মনমহোন সিং ভারতের অর্থনীতিতে নতুন দিক খুলে দেন। যা ছিল একটি টার্নিং পয়েন্ট। পরবর্তীকালে অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। তাঁরই নেতৃত্বে ভারত জাতীয় সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ শুরু করে।

প্রধানমন্ত্রী মোদির শাসনামলে ভারত একটি শক্তিশালী জাতীয় পরিচয় গড়ে তুলেছে, যা ভারতকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে, যা আগে কখনও হয়নি। তার আন্তর্জাতিক প্রচার এবং একটি আত্মবিশ্বাসী জাতি হিসাবে ভারতের ভাবমূর্তি নির্মাণের পদ্ধতিকে তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং বিদেশ মন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্করের দল দ্বারা যথাযথভাবে সহায়তা করা হয়েছে।

এনএসএ অজিত ডোভাল অভূতপূর্ব পদ্ধতিতে জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে তাকে সহায়তা করেছেন- অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয়ই- ইসলামী সন্ত্রাসী পরিকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে, এবং অমিত শাহের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রচেষ্টায় চরম বামপন্থী উগ্রবাদ লাগাম টেনেছে। অনেকাংশে, অত্যন্ত আগ্রাসী চীন ও পাকিস্তানের বাহ্যিক হুমকি হয় নিরপেক্ষ বা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এটি একটি বিশাল অর্জন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর শাসনের দৃষ্টিভঙ্গি ভারতকে সমস্ত উন্নয়নমূলক পরিকল্পনায় আরও নির্ণায়ক হতে সাহায্য করেছে। প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশীকরণ ফোসাক, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে সাফল্য দেশকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।

ডিজিটাল ইন্ডিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের প্রত্যন্তগ্রামগুলিতে ইন্টারনেটের অনুপ্রবেশের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। তাঁর আমলে চন্দ্রযান-৩ সাফল্য উল্লেখযোগ্য।

এই পটভূমিতেই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীত হওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েচে। কিন্তু আমাদের ভুলে যাওয়া উচিৎ নয় , যে ভারতের জনহণের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই এগুলি সম্ভব হয়েছে।

লেখক- আতির খান, আওয়াজ-দ্য ভয়েস-এর প্রধান সম্পাদক

Share this article
click me!

Latest Videos

দেখা যাক ২৬-এর মসনদ কার দখলে যায়? Mamata-কে চ্যালেঞ্জ Agnimitra-র
২৬ এর নির্বাচনে কী থাকবেন ফিরহাদ হাকিম? বাতলে দিলেন শমীক ভট্টাচার্য #shorts #shortsfeed #bjp #tmc
হাড়োয়ায় তৃণমূল জিততেই বিজেপি প্রার্থীর জমি তচনচ, ক্ষোভ উগরে যা বললেন Samik Bhattacharya
ওয়াকফ বিলের (Waqf Bill) আঁচ বাংলার বিধানসভায়, দেখুন কী বললেন Suvendu Adhikari
তন্ত্রযোগ? নাকি বৌমা ও ছেলেকে শিক্ষা দিতেই...আটক দাদু, ঠাকুমা ও জেঠিমা | Hooghly News Today