জেনারেল বিপিন রাওয়াতের (Gen Bipin Rawat) দুর্ঘটনাগ্রস্ত হেলিকপ্টারের শেষ ভিডিও ধার পড়ল এক ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায়। কী ঘটেছিল, কী বলছেন তিনি?
গত ৮ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কুনুরে (Kunur Helicopter Crash) ভেঙে পড়েছিল বায়ুসেনার একটি এমআই১৭ভি৫ (Mi17V5) হেলিকপ্টার। মৃত্যু হয়েছে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত (Gen Bipin Rawat), তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত-সহ (Madhulika Rawat) মোট ১৩ জনের। এখনও গোটা দেশের কাছে পুরো ঘটনাটাই অবিশ্বাস্য। সকলেই এখন উত্তর খুঁজছেন কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? কিছুটা আলোকপাত হয়েছে এক ভাইরাল ভিডিওতে (Viral Video)। বুধবার ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটার সময়, ঘটনাস্থলের কাছেই উপস্থিত ছিলেন এক ওয়েডিং ফটোগ্রাফার। তাঁর ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে সেই ওই অভিশপ্ত হেলিকপ্টারটির শেষ মুহূর্তের ছবি। কী দেখেছলেন তিনি?
কোয়েম্বাটোরে ওয়েডিং ফটোগ্রাফার হিসাবে কাজ করেন ৫২ বছর বয়সী ওয়াই জো ওরফে কুট্টি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার দিন কুট্টি, তাঁর বন্ধু নজর এবং নজরের পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে কুনুরের কাটেকি এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। হাতে ক্যামেরা ছিল, ছবি তুলছিলেন তিনি। হেলিকপ্টারটির জন্য কী ভাগ্য অপেক্ষা করে আছে, সেই সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না তাঁর। কিছু না জেনেই, কুট্টি কপ্টারটির একটি ভিডিও করতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে তাঁর ক্যামেরাতেই ওই কপ্টারটির শেষ ছবি উঠেছে। তাঁর ভিডিও করার কয়েক মিনিট পরই হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছিল। আর সেই মারাত্মক দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছিলেন কুট্টিরা।
কুট্টি জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর বন্ধুরা পাহাড়ি রেলপথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে ছবি তুলছিলেন। তিনি একটি হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পেয়ে উপরে তাকিয়েছিলেন। পাহাড়ি উপত্যকায় কপ্টারটিকে দেখে, স্রেফ কৌতূহলবশতই কুট্টি কপ্টারটির একটি ভিডিও করেন। কিন্তু, দ্রুত সেটি কুয়াশায় মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। একটু পরেই বিকট শব্দ শুনেছিলেন কুট্টিরা। আওয়াজটি লক্ষ্য করে পাহাড়ি পথ ধরে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশের দল। তারা সেখানে যেতে বাধা গিয়েছিল কুট্টিদের। পরে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কুট্টি তাঁর তোলা ভিডিও ফুটেজটি শেয়ারও করেছেন।
ভিডিও ফুটেজটিতে কপ্টারটি ঘন কুয়াশার জালে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার আগে এক ঝলক মাত্র দেখা যায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, পাইলট-সহ মোট ১৪ জনকে নিয়ে কপ্টারটি সকাল ১১.৪৮ এ সুলুর এয়ারবেস থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। দুপুর ১২.১৫ মিনিটে সেটির ওয়েলিংটন এয়ারবেসে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর মাত্র সাত মিনিট আগে, দুপুর ঠিক ১২.০৮ মিনিটে সুলুর এয়ারবেসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে কপ্টারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ওই সময়ই ঘটেছিল ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। কুট্টির তোলা ভিডিওতে যে পরিমাণ ঘন কুয়াশা দেখা গিয়েছে, তাতে কপ্টারের পাইলটের দৃশ্যমানতা খুবই কম হওয়া উচিত। ওই অবস্থায় ফিরে না গিয়ে, কেন এগোতো গেলেন, সেই প্রশ্নের জবাব এখনও পাওয়া যায়নি।