রাজধানী শহর বলে দিল্লির দূষণই সবচেয়ে বেশি চর্চিত। কিন্তু, দিল্লির থেকেও আরও ঊভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে ভারতের বিশেষ করে উত্তর ভারতের বেশ কিছু শহর। বিপন্ন এই সব শহরের মানুষ, পশু-পাখিরা। অনেকেই ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে দূষণরোধী মুখোশ ব্যবহার করছেন। কিন্তু, ভারতের মতো গরীব দেশে দূষণরোধী মুখোশ কেনাটাও অনেকের কাছেই বিলাসিতা। তাই বাধ্য হয়ে বিষ বায়ুই টেনে নিচ্ছেন ফুসফুসে। কিন্তু তাই বলে দেবদেবীরাও এই দূষণে কষ্ট পাবেন? ভারতে তা হয় নাকি।
বারানসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র। দীপাবলিতে এই শহরেও প্রচুর বাজি ফেটেছে। যার ফলে এই সপ্তাহে বারানসীর বায়ুর গুণমান সূচক পৌঁছেছে ৫০০-তে। যা 'অতি গুরুতর' বলে ধরা হয়। এই অবস্থায় সাদারণ মানুষের মুখে মুখোশ থাক বা না থাক, বারানসীর দেবদেবীদের মুখে কিন্তু উছঠে গিয়েছে দূষণরোধী মুখোশ। সিগরার বিখ্যাত শিব-পার্বতী মন্দিরে ভগবান শিব, দেবী দুর্গা, কালী এবম সাইবাবার মূর্তির মুখে লাগানো হয়েছে অ্যান্টিপলিউশন মাস্ক।
মন্দিরের পুরোহিত হরিশ মিশ্র সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে জানিয়েছেন, বারাণসী ধর্মীয় বিশ্বাসের শহর। এখানে মূর্তিকেও জীবন্ত দেবদেবীদের হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তারা যাতে সুখে ও আরামে থাকে তার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রীষ্মে তাদের ঠান্ডা রাখতে চন্দনের কাঠের পেস্ট লাগানো হয়। শীতে গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় পশমের কাপড়। একইভাবে তাঁদের দূষণের হাত থেকে বাঁচাতেই মুখোশ পরানো হয়েছে।
তবে দেবী কালীর মুখে মুখোশ মুশকিলে পরাতে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। একে তাঁর তেজের ভয় রয়েছে, তার উপর তাঁর জিভ বের করা থাকে, যা ঠাকা উটিত নয় বলেই হিন্দুদের বিশ্বাস। তাই জিভ বাইরে রেখেই তাঁকে দূষণরোধী মখোশ পরানো হয়েছে।
শুধু দেবদেবীদের দূষণের হাত থেকে রক্ষা করা নয়, এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে দূষণ সম্পর্কে সচেতনতাও বাড়ছে বলে দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের। হরিশ মিশ্রের দাবি, মন্দির পরিদর্শনের সময় দেবদেবীদের মুখে দূষণরোধী মুখোশ দেখে অনেক ভক্তই এই মুখোশ পরা শুরু করেছেন।