অমিত শাহ বলেন, অনেক সময় বিরোধী দলের লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার জেনেই এই প্রস্তাবগুলি নিয়ে আসে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই এই অনাস্থা প্রস্তাবের উদ্দেশ্য। ৩০ বছর পর প্রথমবারের মতো পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার কাজটি করেছে এদেশের মানুষ।
লোকসভার বাদল অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। মণিপুর হিংসা নিয়ে সংসদে প্রথমবার সরকারকে আক্রমণ করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এর পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রাহুলকে পাল্টা আঘাত করেন এবং পরে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অমিত শাহ বলেছেন, গৌরব গগৈয়ের পুরো বক্তৃতা শোনার পর, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে এই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে শুধুমাত্র বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য। এটা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়।
অমিত শাহ বলেন, অনেক সময় বিরোধী দলের লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার জেনেই এই প্রস্তাবগুলি নিয়ে আসে। জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই এই অনাস্থা প্রস্তাবের উদ্দেশ্য। সংখ্যালঘুর প্রশ্ন নেই এবং জনগণের মধ্যেও বিশ্বাস আছে। ৩০ বছর পর প্রথমবারের মতো পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার কাজটি করেছে এদেশের মানুষ।
অমিত শাহ বলেছেন, মোদিজি হলেন প্রধানমন্ত্রী যিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৭ ঘণ্টা কাজ করেন। ৯ বছরে এমন ৫০টির বেশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। প্রায় ৩০ বছর ধরে এদেশের রাজনীতি দুর্নীতি ও পরিবারবাদে ভুগছিল। মোদীজি দেশকে দুর্নীতি ও পরিবারবাদের রাজনীতি থেকে মুক্ত করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউপিএ কীভাবে ক্ষমতা লাভ করে। কখনো কখনো জোটের চরিত্র প্রকাশ পায় বিপত্তিতে। পাবলিক সব দেখে। এক ভোটে আমাদের সরকার পতন হয়েছিল। কিন্তু ফের একবার দেশে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে অটলজির সরকার এলো। একদিকে যারা কোটি টাকা খরচ করে ভোট কিনেছে, তারা বসে আছে, অন্যদিকে যারা নীতির জন্য রাজনীতি করে তারা বসে আছে।
অমিত শাহ বলেন, আমরা কারও ঋণ মকুব করায় বিশ্বাস করি না। এমন ব্যবস্থা থাকতে হবে যাতে কাউকে ঋণ নিতে না হয়। অমিত শাহ বলেছেন, ভারত করোনার বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করতে পেরেছিল, কারণ সারা বিশ্বে দেশের সরকারগুলি লড়াই করেছিল, কিন্তু ভারতে দেশের মানুষ এবং সমস্ত সরকার লড়াই করেছিল, কিন্তু যখন ভ্যাকসিন এলো, কিছু লোক একে নিয়েও বিরোধিতা করেছিল মোদী সরকারের।
তিনি বলেন, করোনার সময় আমাদের সরকার ৮০ কোটি মানুষকে ৫ কেজি খাদ্যশস্য দিয়েছে। আমরা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিতেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এতদিন দেশের নিরাপত্তার ভরসা ছিল না। দেশে জঙ্গিরা ঢুকে পড়ত। দেশ সেনাবাহিনীর জওয়ানদের অসহায় মৃত্যু দেখত। মোদী সরকার আসার পর পাকিস্তান দুবার সাহস করে। আমরা পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে বিমান হামলা ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করেছি।
জানিয়ে রাখি, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের দ্বিতীয় দিনে বিরোধী সাংসদদের তুমুল হট্টগোল হয়। সোমবার লোকসভার সদস্যপদ পুনরুদ্ধারের পরে রাহুল গান্ধীর ভাষণটি প্রতীক্ষিত ছিল, যা বুধবার ঘটেছে। তিনি মণিপুর ইস্যুতে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর বেশ কয়েকটি আক্রমণ শুরু করেছিলেন এবং আদানি বিতর্কও উত্থাপন করেছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় রাহুল গান্ধীকে পাল্টা আঘাত করেন।
বিরোধী জোট ইন্ডিয়া কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে, যা ২৬ জুলাই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা গৃহীত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ আগস্ট সংসদে ভাষণ দিতে পারেন।