সর্বানন্দের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, হেমন্তের সাংগঠনিক দক্ষতা, জোড়া ফলায় অসম জয়

  • অসমে ফের সরকার গড়ার পথে বিজেপি, অগপ জোট
  • এই প্রথম অসমে পরপর দুবার অকংগ্রেসি সরকার ক্ষমতায় আসবে
  • রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর জোরালো প্রচার কাজে এল না
  • হিমন্ত বিশ্ব শর্মার আক্রমণাত্মক প্রচারের সুবিধা পেল বিজেপি

Asianet News Bangla | Published : May 2, 2021 10:13 AM IST / Updated: May 02 2021, 04:05 PM IST

২০১৬-র পর ২০২১। উত্তর পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্যে অসমে আবার ক্ষমতা দখল করল বিজেপি। গতবারের থেকে কিছু আসন কমলেও পদ্ম শিবিরের জয় সহজই এল বলা চলে। একসময়ের কংগ্রেস গড়ে এখন শুধু পদ্মের দাপাদাপি। এই প্রথম অসমে কংগ্রেসের বাইরে কোনও দল পরপর দু বার ক্ষমতায় এল। এর আগে ১৯৮৫ ও ১৯৯৬ সালে অসম গণ পরিষদ অসমে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু সেটা পরপর দু'বার ছিল না। প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া ছিল, সিএএ-এনআরসি ইস্যুও ছিল, শরিক দল বাছা নিয়েও সমস্যা ছিল, কিন্তু তারপরেও ভূপেন হাজারিকার রাজ্যে জয়ের সুরটা দারুণ বাঁধল বিজেপি। দুপুর ৩টে পর্যন্ত হিসেব বলছে ১২৬ আসনের অসম বিধানসভায় বিজেপি ও তাদের শরিক দল এগিয়ে আছে ৭৬টি আসনে, কংগ্রেস ও তাদের শরিক দল এগিয়ে ৪৯টি-তে। যেখানে ৬৪ আসনে জিতলেই সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার গড়া যাবে।

কিন্তু কী করে কঠিন লড়াইয়ে এত স্বাচ্ছন্দ্যে একটা জয় এল? এবারের ভোটে বোড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টের প্রধান হগরামা মোহিলারির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হিমন্তের প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে দেশের সংবদামাধ্যমে বড় বিতর্ক হয়েছিল। সিএএ, এনআরসি-র মত ইস্যুও ছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে অনেকেই ভেবেছিলেন, উত্তর পূর্ব ভারতে বিজেপি-কে একের পর এক রাজ্য উপহার দেওয়া হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মুখ্যমন্ত্রী না হওয়ার ক্ষোভে সেভাবে প্রচার করতে নাও পারেন। সে সব কিছু হল না অবশ্য। উন্নয়নের খতিয়ান বড় করে তুলে, সিএএ এনআরসি ইস্য়ুকে খুব বুদ্ধি করে কাজে লাগিয়ে, বিরোধীদের ছন্নছাড়া অবস্থাকে বুঝে অঙ্ক কষে শেষ হাসিটা বিজেপিই হাসল।

হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ২০১৬ বিধানসভার আগে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর পদ্ম শিবিরে হাওয়া লাগে। ২০১৬ সালে প্রথমবার তরুণ গগৈ-এর কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তবে সে ভোটে বিজেপির জয়ের কারিগর হিমন্তকে নয়, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী করে সর্বান্দ সোনওয়ালকে। হেমন্তকে রাজ্য মন্ত্রিসভার গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি, দলের বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই পাঁচ বছরে হিমন্তের রাজনৈতিক উত্থান চোখে পড়ার মত। উত্তর পূর্ব ভারতের একের পর এক রাজ্যে বিজেপি-র জয়ের পিছনে হিমন্তের বড় হাত রয়েছে। ভোট রাজনীতির দক্ষতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতার জন্য হিমন্তকে অনেকেই চাণক্য বলে ডাকেন।

এদিকে, অসমে বেশ কিছু ইস্যুতে সর্বানন্দ সোনওয়াল কিছুটা কোণঠাসাই ছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, ২০২১ হয়তো হেমন্তকে মুখ করেই লড়বে বিজেপি। কিন্তু না। তেমনটা হয়নি। তবে তাতেও অসুবিধা হয়নি। সর্বানন্দের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, হিমন্তের সংগঠনিক দক্ষতায়, জোড়া ফলায় বাজিমাত করল বিজেপি।  বিশেষজ্ঞদের ধারনা ছিল, অসমে যদি বিজেপি-র জয় কঠিন হত, একেবারে সুতোয় ঝুলে সরকার গড়ার কথা সংখ্য়া হত, সেক্ষেত্রে হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রী করা হত। সে সব অবশ্য কিছু হল না। এখন দেখার বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কী সিদ্ধান্ত নেন।

২০১৬ অসম বিধানসভার ফল
মোট আসন: ১২৬
এনডিএ: ৮৬
কংগ্রেস: ২৬
ইউডিএফ: ১৩

২০২১ অসম বিধানসভার ফল (দুপুর ৪টে পর্যন্ত)
মোট আসন: ১২৬
এনডিএ এগিয়ে/জয়ী: ৭৬
ইউপিএ এগিয়ে/জয়ী: ৪৯

Share this article
click me!