স্বামী মারেও না, ঝগরাও করে না
স্ত্রী কোনও ভুল করলেও ক্ষমা করে দেয়
উল্টে স্ত্রীকে রান্না করে খাওয়ায় মাঝে মাঝে
তাও কেন স্বামীর থেকে আলাদা হতে চাইলেন স্ত্রী
ভারতে প্রতিবছর বহু মহিলা গার্হস্থ হিংসার শিকার হন। স্বামী প্রহার করে, কিংবা শ্বশুরবাড়ির লোকজন পণের দাবিতে অত্যাচার করছে - এমন ঘটনা আকছার শোনা যায়। কিন্তু, এবার একেবারে উলট পুরান ঘটল। স্বামীর কখনও তাঁর সঙ্গে ঝগরা-মারামারি করেন না এবং অত্যন্ত ভালোবাসেন বলে উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার এক মুসলিম মহিলা শরিয়ত আদালতে তালাকের আবেদন জানালেন।
তাঁদের বিয়ে হয়েছে মাত্র ১৮ মাস। মহিলা জানিয়েছেন এই ১৮ মাসে একবারও তাঁর স্বামী তাঁর গায়ে হাত তোলা তো দূর অস্ত, কখনও গলা তুলে কথা অবধি বলেননি। কোনও সমস্যা নিয়ে তাঁর প্রতি হতাশ পর্যন্ত ব্যক্ত করেননি। তিনি কোনও ভুল করলেও সবসময় স্বামী তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। উল্টে তিনি মাঝে মাঝে মহিলাকে রান্নাবান্নায় সাহায্য করেন, নিজে রান্না করে তাঁকে খাওয়ানও। অন্যান্য গৃহকর্ম সম্পাদনেও সহায়তা করে থাকেন।
এই অবস্থায় তাঁর দমবন্ধ লাগছে বলে জানিয়ছেন ওই মহিলা। আদালতে বলেছেন স্বামীর এত ভালবাসা তিনি হজম করতে পারছেন না। মহিলা আরও বলেছেন বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে তর্ক করতে চেয়েছিলেন, ঝগরা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর স্বামী যে কোনও বিষয়েই তাঁর সঙ্গে একমত হন। এমন বিবাহিত জীবন তাঁর দরকার নেই বলে জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। স্বামীর অতিরিক্ত ভালোবাসা এবং কখনও ঝগরা না করা ছাড়া তালাক চাওয়ার তাঁর অন্য কোনও কারণ নেই বলেও পরিষ্কার করে দিয়েছেন ওই মহিলা।
স্বাভাবিকভাবেই শরিয়ত আদালতে ওই মহিলার তালাক-এর আবেদন 'অবজ্ঞার যোগ্য' বলে সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছে। এরপর বিষয়টি স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে পৌঁছেছিল। কিন্তু তারাও এই অদ্ভূত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আদালত এখন দম্পতিকে বিষয়টি পারস্পরিক সমাধানের জন্য বলেছে।
এদিকে, মহিলার স্বামী বলেছেন স্ত্রীকে সর্বদা তার সুখী রাখতে চান তিনি। স্ত্রী আদালতে যাওয়ার পর তিনি উপলব্ধি করেছেন স্ত্রীর সব হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মেলালে সবসময় যে তিনি সুখি হবেন, তেমনটা নয়। তাই এবার থেকে কিছু কিছু বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগরা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।