উত্তেজিত আইএএস অফিসারকে একজন লরিচালক শান্তভাবে পরামর্শ দিলেন ভদ্রভাবে কথা বলার জন্য। ট্রাকচালকদের বৈঠকে অবাক করা ঘটনা।
কবি হরিশচন্দ্র মিত্রের লেখা বিখ্যাত ‘বড় কে’ কবিতার দুটি লাইন ছিল, ‘নিজে বড় হতে চায় / ছোট বলি তারে’, অর্থাৎ, কোনও মানুষ নিজেকে বড় দেখানোর জন্য অন্যকে ছোট করে দেখাতে চান। ঠিক সেইরকমই একটি উদাহরণ দেখা গেল মধ্যপ্রদেশের শাজাপুরে। এই অঞ্চলের জেলা কালেক্টরকে ট্রাক-চালকদের বৈঠকে এমন ব্যবহার করতে দেখা গেল, যার সামনে সম্মানজনক হয়ে উঠল অপরদিকে বসে থাকা লরিচালকের ব্যবহারই।
-
পদমর্যাদায় জেলা কালেক্টর কিশোর কান্যাল একজন IAS অফিসার। অবশ্যই ভারতের কঠিনতম পরীক্ষায় পাশ করার পর কড়া প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে তিনি দেশের একটি চূড়ান্ত মর্যাদাসম্পন্ন পদে আসীন হয়েছেন। অবশ্যই লরি চালাতে হলে নিখুঁত দক্ষতা থাকা প্রয়োজন, তবে, অতটা কঠিন পরীক্ষায় পাশ করতে হয় না, তাই IAS অফিসারদের মর্যাদাও লরিচালকরা পান না। তবে, আইএএস অফিসার কিশোর কান্যালের ক্ষেত্রে ‘সংসারে সে বড় হয়, বড় গুন যার’ – এই পঙক্তিটি পুরোপুরি খারিজ হয়ে যেতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখার পর। কারণ, লরিচালকদের সঙ্গে একটি জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য এবং ব্যবহার করে বসলেন, যা দেখে তাঁর বিরুদ্ধে নেটিজেনদের নিন্দার ঝড় এবং ক্ষোভ উগরে এসেছে।
-
একজন লরিচালক নিজেদের অধিকারের কথা জানাতে গেলে তিনি স্পষ্টত আঙুল তুলে হুঁশিয়ারির সুরে তাঁকে বলেন, 'কী বলছ, খেয়াল রাখো। কী করবে তুমি? তোমার মর্যাদা কী আছে?" । ভারতে নতুন চালু হওয়া হিট-এন্ড-রান আইন নিয়ে ট্রাকচালকদের অভিযোগ শোনার জন্য আলোচনা করতে বসে নিজেই অশান্ত হয়ে পড়েন IAS অফিসার কিশোর কান্যাল। পালটা লরিচালক তাঁর মুখের ওপর জবাব দেন, "এটাই তো আমাদের লড়াই যে, আমাদের কোনও মর্যাদা নেই।" উত্তেজিত জেলা কালেক্টরকে একজন লরিচালক শান্তভাবে পরামর্শ দিলেন ভদ্রভাবে কথা বলার জন্য। এই বৈঠক ভারতের ইতিহাসে এক চমকপ্রদ ঘটনা।
যদিও, ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে ওই IAS অফিসার সাফাই দিয়েছেন যে, তিনি কাউকে আঘাত করার জন্য এরকম খারাপভাবে কথা বলেননি।