চণ্ডিগড়ের নিয়ন্ত্রণ অবিলম্বে পঞ্জাবের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বিধানসভায় প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান। গত সপ্তাহে চণ্ডিগড়ের প্রশাসনিক কর্মীদের জন্য অমিত শাহ-এর এক ঘোষণার পর থেকেই চলছে কেন্দ্র-রাজ্য চাপান-উতোর।
চণ্ডিগড়ের নিয়ন্ত্রণ, অবিলম্বে পঞ্জাবে স্থানান্তর করার ডাক দিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান। শুক্রবার, পঞ্জাব বিধানসভায়, তিনি এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলেন। একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে, চণ্ডিগড়ের প্রশাসনিক 'ভারসাম্য নষ্ট করার' চেষ্টার অভিযোগও করেছেন। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন মান। এর মধ্যেই, এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেল।
পঞ্জাব পুনর্গঠন আইন
চন্ডিগড়, পঞ্জাব এবং হরিয়ানার সম্পর্কটা ভারি অদ্ভূত। চন্ডিগড় একটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল, যা একইসঙ্গে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা রাজ্যের রাজধানী। ১৯৬৬ সালে পঞ্জাব পুনর্গঠন আইন লাগু করা হয়েছিল। পঞ্জাব রাজ্যকে ভেঙে হরিয়ানা রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড় গঠন করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে পঞ্জাবের কিছু অংশ, সেইসময়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে থাকা হিমাচল প্রদেশ'এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল।
অমিত শাহ-র ঘোষণা
কেন্দ্র-পঞ্জাব সাম্প্রতিক এই দ্বন্দ্বের মূলে রয়েছে, চণ্ডিগড়ের প্রশাসনিক কর্মচারীদের জন্য কেন্দ্রের পরিষেবা সংক্রান্ত নিয়মগুলির পরিবর্তন করা। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন চণ্ডিগড়ের প্রশাসনের কর্মীরাও কর্মচারীদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন। কিন্তু, তা মানতে নারাজ পঞ্জাব সরকার। বিরোধী দলগুলি একযোগে অভিযোগ করেছে, এই পদক্ষেপ চণ্ডিগড়ের উপর পঞ্জাবের দাবি কমিয়ে দেবে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় চেতনা বিরোধী।
পঞ্জাব বিধানসভার রেজোলিউশন
এদিন বিধানসভায় তোলা রেজোলিউশনে ভগবন্ত মান জানিয়েছেন, পঞ্জাব পুনর্গঠনের পর থেকে, 'ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ডে'র মতো, সাধারণ সম্পদের প্রশাসনে বরাবর ভারসাম্য রক্ষা করা হত। পঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মনোনীত ব্যক্তিদের পরিচালনার পদ দেওয়া হত। কিন্তু, সাম্প্রতিক বেশ কিছু পদক্ষেপের মাধ্যমে, কেন্দ্রীয় সরকার এই ভারসাম্য নষ্ট করার চেষ্টা করছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, কেন্দ্র ভাকরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের সদস্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছে। এতে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসাররা সুযোগ পাবেন। অথচ, ঐতিহ্যগতভাবে পঞ্জাব এবং হরিয়ানার অফিসারদেরই ভাগাভাগি করে এই বোর্ডের সদস্য করা হত।
আতঙ্কিত বিজেপির প্রতিক্রিয়া
পঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চণ্ডিগড় প্রশাসনেও সবসময়ই ৬০:৪০ অনুপাতে পঞ্জাব ও হরিয়ানার অফিসারদের নিয়োগ করা হতো। তবে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার চণ্ডিগড়ে বাইরের রাজ্যের অফিসারদেরও নিয়োগ করেছে। চণ্ডিগড় প্রশাসনের কর্মচারীদের জন্য কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস বিধি চালু করা হয়েছে। তাঁর দাবি, সাম্প্রতিক পঞ্জাব নির্বাচনে আপ দলের ফলাফলে আতঙ্কিত হয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির এই পদক্ষেপ নিয়েছে। কংগ্রেস এবং অকালি দলও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে।