
কানাডার বিদেশমন্ত্রী অনিতা আনন্দের ভারত সফর: খলিস্তানি সমর্থকের হত্যার পর ভারত ও কানাডার সম্পর্কে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, এখন মনে হচ্ছে তার প্রভাব ধীরে ধীরে কমছে। কানাডার বিদেশমন্ত্রী অনিতা আনন্দ রবিবার গভীর রাতে ভারতে আসছেন। এই সফর শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। একই সময়ে, ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরও ভারতে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—এই সবই কি কোনো কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক?
গত কয়েক মাসে খলিস্তানি সমর্থকের হত্যা নিয়ে ভারত ও কানাডার মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা গিয়েছিল। এখন কানাডার নতুন বিদেশমন্ত্রী ভারত সফরে আসায় এটা স্পষ্ট যে, দুই দেশ মতভেদ ভুলে এগিয়ে যেতে চায়। সূত্র অনুযায়ী, অনিতা আনন্দ ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে দেখা করবেন। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো—বাণিজ্য, শক্তি এবং নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে নতুন করে সাজানো।
ভারত ও কানাডা এখন বাণিজ্য বৈচিত্র্য, শক্তি পরিবর্তন এবং কর্মসংস্থান তৈরির মতো বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই বৈঠক দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক বন্ধনকে একটি নতুন মাত্রা দিতে পারে। অনিতা আনন্দ মুম্বাইয়ে ভারতীয় এবং কানাডিয়ান সংস্থাগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবেন, যাতে বিনিয়োগ এবং ব্যবসার সুযোগের ওপর ठोस পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
মজার বিষয় হলো, যখন কানাডার বিদেশমন্ত্রী ভারতে থাকবেন, ঠিক সেই সময়েই মার্কিন রাষ্ট্রদূত সার্জিও গোরও ভারত সফরে রয়েছেন। এটা কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি কোনো বড় কৌশলগত জোটের প্রস্তুতি চলছে? কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, এই সফরগুলো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, ভারত এখন একটি কূটনৈতিক স্মার্ট চাল খেলছে। গত মাসে অজিত ডোভাল কানাডার এনএসএ নাথালি জি ড্রুইনের সঙ্গে দেখা করে সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। সেই বৈঠক এবং এখন অনিতা আনন্দের সফর—দুটি মিলিয়ে এটাই প্রমাণ করে যে ভারত এখন “তিক্ততার বদলে কৌশল” নিয়ে কাজ করছে।
ভারত ও কানাডা এখন আর পুরোনো মতবিরোধ নিয়ে পড়ে নেই, বরং ভবিষ্যতের যৌথ স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আগামী সপ্তাহগুলোতে এটা স্পষ্ট হবে যে এই কূটনৈতিক মাস্টারস্ট্রোক কতটা কার্যকর প্রমাণিত হয়।