২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে, বিজেপি সরকার অর্থনীতির বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার শুরু করেছে, যা ভারতকে ব্যবসার বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী র্যাঙ্কে ওপরের দিকে উঠতে সাহায্য করেছে। মোদী সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য ভারতকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করা।
২০২২-২৩ কেন্দ্রীয় বাজেটের (Budget 2022-23) তারিখ যতই এগিয়ে আসছে, এর প্রস্তুতিও গতি পাচ্ছে কেন্দ্রের (Modi Govt) তরফে। দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের (Finance Minister Nirmala Sitaraman) পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) নিজেও প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর। সেই লক্ষ্যেই শুক্রবার মোদী গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি অর্থলগ্নীকারী সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে দেখা করেন। সেই বৈঠকে ভারতকে কীভাবে বিনিয়োগের গন্তব্যে পরিণত করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ চান মোদী।
সরকারী সূত্রের মতে, বৈঠকে আলোচনা করা হয় ভারতে ব্যবসা করা সহজ করার, আরও পুঁজি বা লগ্নীকারীদের আকৃষ্ট করার এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাস্তাগুলি নিয়ে। সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছরের বাজেটের আগে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে শিল্পপতিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সম্পদশালী ২০ জন বড় মার্কিন বিনিয়োগকারীর সাথে দেখা করেছিলেন।
সূত্র বলছে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে, বিজেপি সরকার অর্থনীতির বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার শুরু করেছে, যা ভারতকে ব্যবসার বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী র্যাঙ্কে ওপরের দিকে উঠতে সাহায্য করেছে। মোদী সরকারের পরবর্তী লক্ষ্য ভারতকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করা। অটোমোবাইল থেকে সেমিকন্ডাক্টর এবং সৌর খাতের জন্য উৎপাদনযুক্ত স্কিম ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে ভারতকে পরিণত করা হবে ইলেকট্রনিক্স হাবে। এই প্রকল্প রূপায়নের জন্য সরকার আগামী ছয় বছরে ২০টিরও বেশি সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন, কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ডিসপ্লে ফ্যাব্রিকেশন (ফ্যাব) ইউনিট স্থাপন করবে বলে খবর। এজন্য ৭৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র সরকার বলে খবর।
বিভিন্ন পিএলআই বা প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভের মাধ্যমে কেন্দ্র উত্পাদন এবং রপ্তানির সুযোগকে আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে খবর। এক সরকারি আধিকারিকের মতে এজন্য কেন্দ্র সেমিকন্ডাক্টর পলিসি গ্রহণ করেছে। তিনি আরও জানান, সেমিকন্ডাক্টর পলিসি গ্রহণের পর কেন্দ্রের লক্ষ্য এক থেকে দুটি ফ্যাব ইউনিট গড়ে তোলা। এছাড়াও ডিজাইনিং এবং উত্পাদনের উপাদানগুলির প্রতিটির জন্য ১০টি ইউনিট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অটোমোবাইল থেকে হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়।
কেন্দ্রের দাবি বেশ কিছু অর্থনৈতিক সূচক এখন প্রাক-মহামারী পর্যায়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্বব্যাংকের অনুমান ভারতের জিডিপির বৃদ্ধি যথাক্রমে প্রায় ৯.৫ শতাংশ এবং ৮.৩ শতাংশ থাকবে। সোমনাথন আরও জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের মনোভাব পজেটিভ হলেও, এখনও তার প্রতিফলন শুরু হয়নি সেভাবে। চলতি অর্থবর্ষ ২০২১-এর প্রথম চার মাসে ইতিমধ্যেই ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) দেশে এসেছে।