সোমবার রাতের পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন সংঘাত নতুন রূপ পেয়েছে। ৪৫ বছর পর এই প্রথম গুলি চলেছে লাদাখে। লাদাখে ভারতীয় সেনাকে সবরকম ভাবে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে লাল ফৌজ। সোমবার রাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় পিপলস লিবারেশন আর্মিই। তারপর সেই দোষ ভারতের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে বেজিং।
গত তিন মাস ধরে লাদাখ সীমান্তে জারি রয়েছে ভারত-চিন দ্বন্দ্ব। সীমান্তে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক অবস্থায়। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ভারত সরকারের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে , ভারতীর সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কোনও গুলি চালায়নি। পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেক অঞ্চলে চিনের লালফৌজের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহেই এবার ভারতীয় সেনা চুশূলের বেশ কয়েক'টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছে। বিগত একসপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে তিন বার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা উপেক্ষা করে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে লাল ফৌজের সেই চেষ্টা। সূত্রের খবর তাই এবার চুশূলে যে শিখর ভারতীয় সেনার দখলে রয়েছে, সেখানে লালফৌজকে আটকাতে চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জুন রাতের অন্ধকারে গলওয়ান উপত্যকায় চিনের অতর্কিত হানাদারি রুখে গিয়ে শহিদ হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। যদিও ওই সংঘর্ষে একাধিক চিনাসেনাও নিহত হয়েছিল। কিন্তু মৃতের সেই সংখ্যা সরকারি ভাবে কখনই ঘোষণা করেনি চিন। তবে বিদেশি মিডিয়ার বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে সংখ্যাটা ভারতের দ্বিগুণ ছিল। যে কারণে বেজিং বিষয়টা চেপে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এলএসি-র কাছে সাধারণ অঞ্চলে চিনাসেনার উপস্থিতি ভারতের নজর এড়ায়নি। সোমবার রাতে রড, ধারালো অস্ত্র হাতে সেখানে লালফৌজের তত্পরতার ছবি ধরাও পড়েছে। মঙ্গলবার সে ছবি প্রকাশ্যেও এনেছে ভারতীয় সেনা। বিগত বেশ কিছুদিন ধরে চিনের পিপল'স লিবারেশন আর্মি ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করছে। কিন্তু, ভারতীয় সেনা সতর্ক থাকার কারণে, লালফৌজকে বারবার ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে। তাই এবার চিনা সেনার আগ্রাসন রুখতে চুশূলে কাঁটাতারের বেড়া দিল ভারত।
এদিকে লাদাখে গুলি চিন শূন্যে গুলি চালিয়েছে ভারতীয় সেনা এই দাবি করার পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে বেজিং। সরকারি মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধের হুমকি দিয়েছে চিন। যদিও পরে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক আসন্ন শীতের সময়ে লাদাখ অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা বলে উত্তাপ কিছুটা কমানোর বার্তাও দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবার মস্কোয় সাংহাই সম্মেলনের ফাঁকে ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা।