
Northern Commander: চরমে ভারত-পাক উত্তেজনা। পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই তলানীতে দুই দেশের সম্পর্ক। সীমান্তে চরম অস্থিরতা। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে সেনার কমান্ডার পদে নিযুক্ত হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রতীক শর্মা। জানা গিয়েছে,
উধমপুর-ভিত্তিক উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান হিসাবে জম্মু এবং লাদাখ (Ladakh) অঞ্চলে মোতায়েন ভারতীয় সেনার নেতৃত্ব দেবেন তিনি। সূত্রের খবর,0 তিন দশকের বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই অফিসার। আগামী ৩০ এপ্রিল অবসর নিচ্ছেননর্দার্ন সেনা কমান্ডার এমভি সুচিন্দ্র কুমার। তাঁরই স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন প্রতীক শর্মা।
জানা গিয়েছে, জঙ্গিদের যম হিসেবে পরিচিত এই দুঁদে সেনাকর্তা এবার থেকে সামলাবেন দেশের উত্তরাঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্ব। পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রতীক শর্মাকে নিয়োগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে দেশের ওয়াকিবহাল মহল। সোমবার রাতে ভারতীয় সেনার ভারতীয় সেনার উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে প্রতীক শর্মাকে। ভারতীয় সেনার মাদ্রাজ রেজিমেন্ট কমান্ডার হিসেবে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন এই অফিসার।
কোন কোন গুরু দায়িত্ব সামলেছেন প্রতীক শর্মা (Prateek Sharma News):-
সূত্রের খবর, ভারতীয় সেনার মাদ্রাজ রেজিমেন্ট কমান্ডার অফিসার হিসেবে তিনি শ্রীলঙ্কায় 'অপারেশন পবন' এর নেতৃত্বে ছিলেন। এছাড়াও সিয়াচেনে অপারেশন মেঘদূত-এর দায়িত্ব নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ২০০১ সালে সংসদে জঙ্গি হামলার পর সীমান্তে জঙ্গি নিধনে 'অপারেশন পরাক্রম' পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এছাড়াও জম্মু কাশ্মীরে ভারতীয় সেনার জঙ্গিবিরোধী অভিযান অপারেশন রক্ষক-ও সুদক্ষ নেতৃত্ব দিয়ে পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ওই অভিযানের সময় পাকিস্তানের কোমর কার্যত ভেঙে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা (Indian Army)।
এদিকে কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পাল্টা প্রত্যাঘাত দিতে তৈরি হচ্ছে ভারত। সূত্রের খবর, ভারত সরকার প্রত্যাঘাতের যে পরিকল্পনা করছে তাতে বিশেষ ভূমিকা নেবে ভারতীয় সেনার এই উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডার (Northern Commander)। আরও জানা গিয়েছে, এই মুহুর্তে ভারতীয় সেনার আধিকারিক ও কর্মীদের মনোবল বাড়াতেই প্রতীক শর্মার মতো সাহসী ও জাঁদরেল আধিকারিককে নর্দান কম্যান্ডের কম্যান্ডার ইন চিফ পদে নিয়োগ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ড একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট, যা পশ্চিমে নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং পূর্বে লাদাখ, যেখানে ভারতীয় সেনারা চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে মুখোমুখি হয়। সেখানেই তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ২৯ ও ৩০ এপ্রিলের মধ্যরাতে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের পোস্ট থেকে অকারণে ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ শুরু করে, যার ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্রুত জবাব দেয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে পাকিস্তানি বাহিনী জম্মু অঞ্চলের নওশেরা, সুন্দরবনী এবং আখনুর সেক্টরে ভারতীয় অবস্থানগুলিকে লক্ষ্য করে। পরবর্তী আপডেটে নিশ্চিত করা হয়েছে যে একই ধরনের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা উত্তরের বারামুলা এবং কুপওয়ারা জেলায়, সেইসাথে পারগওয়াল সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্তে (আইবি) রেকর্ড করা হয়েছে।
পহেলগাম জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের আতঙ্ক প্রকাশ্যে এসেছে। প্রতিদিন তার সরকারের মন্ত্রীরা ভারতের আক্রমণের ভয়ের কথা বলছেন। অন্যদিকে, তাদের সেনাবাহিনী সীমান্তে ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। ২৭-২৮ এপ্রিল রাতে কুপওয়ারা এবং পুঞ্চ জেলার বিপরীত দিক থেকে বিনা উস্কানিতে গুলি চালানো হয়। ২৬-২৭ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তুতমারি গলি এবং রামপুর সেক্টরের কাছে সীমান্তের ওপার থেকে গুলি চালায়। একইভাবে, ২৫-২৬ এপ্রিল রাতে এবং ২৪ এপ্রিল রাতে, নিয়ন্ত্রণ রেখার কিছু জায়গায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গুলি চালায়।
গত ছয় দিন ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে এই ধরনের লঙ্ঘন চলছে। তবে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এর উপযুক্ত জবাব দিচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রতি ভয়ের ফলস্বরূপ পাকিস্তানের এই কাপুরুষোচিত পদক্ষেপ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।