ভারতীয় সেনা জওয়ানদের জন্য 'ক্যামোফ্লেজ' প্যাটার্নের পোশাক, পেটেন্ট নিল সেনাবাহিনী

ভারতীয় সেনাবাহিনীর জংলা পোশাকের জনপ্রিয়তা সর্বজন বিদিত। এবার সেনাবাহিনী সামনে নিয়ে আসছে আরও অত্যাধুনিক পোশাক। যার উপরে নিজস্ব মালিকানা বজায় রাখতে পেটেন্টও নিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী।

Bhaswati Mukherjee | Published : Nov 3, 2022 6:00 PM IST / Updated: Nov 04 2022, 12:31 AM IST

কিছুদিন আগেই ভারতীয় সেনাবাহিনী নতুন পোশাককে সামনে নিয়ে এসেছিল। আর এই পোশাককে সরকারিভাবে রেজিস্ট্রার করল সেনাবাহিনী। এর জন্য কলকাতার কন্ট্রোলার জেনারেল অফ প্যাটার্নস, ডিজাইনার্স অ্যান্ড ট্রেডমার্ক-এ এই পোশাককে নথিভুক্ত করেছে তারা।

সেনাবাহিনীর এক কর্তা জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই এই পোশাকের পেটেন্ট সমন্ধীয় তথ্য ২১ অক্টোবর পেটেন্টস অফিসের জার্নালেও প্রকাশ পেয়েছে। চলতি বছরেরই ১৫ জানুয়ারি আর্মি ডে-তে ডিজিটাল ডিজাইন পদ্ধতিতে তৈরি এই পোশাককে সর্বপ্রথম সামনে নিয়ে এসেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী।

যুদ্ধের নতুন সেনা পোশাক

নতুন ধরনের এই পোশাকে একদিকে যেমন বর্তমান সময়ের যুদ্ধক্ষেত্রের চাহিদাগুলোকে মাথায় রাখা হয়েছে। তেমনি এতে এমন এক লুক অ্যান্ড ফিলকে অনুসরণ করা হয়েছে যা সময়পোযোগী। এই পোশাকে যে ধরনের কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই একদিকে যেমন হালকা, তেমনি শক্ত মানে কোনওভাবে ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, কাপড়ের মধ্যে এমনভাবে ফাঁক রাখা হয়েছে যা বায়ু চলাচলের পক্ষে খুবই সহায়ক, খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যেতে পারে এবং পোশাক রক্ষণাবেক্ষণের ঝঞ্ঝাটও কম। সেনাবাহিনীর এই কর্তা আরও জানিয়েছেন যে, 'এই পোশাকের আরও একটি বিশেষত্ব হচ্ছে এতে জেন্ডার স্পেসিফিক সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, মানে মহিলা এবং পুরুষ- দুই ধরনের লিঙ্গের পক্ষে খুবই সহায়ক।'

পেটেন্ট রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা কি

এই নতুন ধরনের জংলা পোশাক এবং তার নকসার এক্সক্লুসিভ রাইট যা ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস বা আইপিআর নামে পরিচিত তা এখন থেকে শুধুমাত্র ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছেই থাকবে। এর ফলে এই ধরনের জংলা পোশাক অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। সেনাবাহিনীর অনুমতি ব্যতিরেক এই পোশাকের ব্যবহার অনৈতিক এবং আইনবিরুদ্ধ বলে বিবেচিত হবে। সেনাবাহিনীর অনুমোদিত সংস্থার বাইরে কেউ এই পোশাক তৈরির চেষ্টা করলে তাকে আইনি লড়াই-এর সম্মুখিন হতে পারে।

এমনকি এর জন্য সেনাবাহিনী পোশাকের অনৈতিক ব্যবহারের অভিযোগ তুলে পোশাকের নকসায় ইনফ্রিজমেন্ট বা নকলনবিশের মামলাও দায়ের করতে পারে। এই অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে দোষী সংস্থা বা ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তিকালীন বা স্থায়ী কোনও বিধিনিষেধের সামনে যেমন পড়তে হতে পারে, সেই সঙ্গে বিপুল আর্থিক জরিমানার সম্মুখিন হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সেনাবাহিনী ইতিমধ্যেই এই নতুন পোশাককে বাহিনীর মধ্যে বিতরণ করতে ৫০ হাজার সেট পোশাক তৈরি করেছে। যাতে সাহায্য করেছে সেনাবাহিনীর ক্যান্টিল স্টোর্স ডিপার্টমেন্ট। এমনকী ১৫ সিএসডি ডিপো, যার মধ্যে দিল্লি, লেহ, লাদাখ, বিডি বাড়ি, শ্রীনগর, উধমপুর, আন্দামান ও নিকোবর, জবলপুর, মাসিমপুর, নারাঙ্গি, ডিমাপুর, বাগডোগরা, লখনউ, আম্বালা, মুম্বই এবং খাড়কি-র মতো এলাকার সেনা বেস রয়েছে।

সেনবাহিনীর এই কর্তা আরও জানিয়েছেন যে, এই নতুন ধরনের পোশাককে কীভাবে সেলাই করতে হবে এর জন্য ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর দরজি এবং বাইরের অনুমোদিত সংস্থার দরজি ও সেনাবাহিনীর নির্বাচিত যে সব দরজি রয়েছেন তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। এর জন্য দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি বা এনআইএফটি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল।

এখন সেনাবাহিনীর লক্ষ হচ্ছে যে প্রচুর পরিমাণে এই পোশাক তৈরি করা এবং তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিলি করা। এর জন্য ১১.৭ লক্ষ নতুন পোশাকের সেট তৈরি করা হচ্ছে। যার বরাত দেওয়া হয়েছে জেসিও এবং ওআর নামে সেনাবাহিনীর অনুমোদিত দুই সংস্থাকে। ইনডিভিজুয়াল কিট বা ১৫ মাসের লাইফ সাইকেল কনসেপ্ট-কে মাথায় রেখে এই পোশাক তৈরি করতে বলা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে ২০২৩ সালের অগাস্ট মাসের মধ্যে এই পোশাক তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন-

সোশাল মিডিয়াকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা, রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা যেন সীমান্তকে দুর্বল না করে

প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলা, পরিস্থিতির ওপর সতর্ক নজর রাখছে ভারত 

Share this article
click me!