
ভুটানে বুদ্ধের অবশেষ: ভারত ও ভুটানের মধ্যে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ইতিহাস গড়ছে। থিম্পুতে চলমান ভগবান বুদ্ধের পবিত্র অবশেষের প্রদর্শনী ২৫ নভেম্বর ২০২৫-এ শেষ হচ্ছে। এই পবিত্র অবশেষগুলি ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য আজ, ২৪ নভেম্বর, একটি বিশেষ ভারতীয় প্রতিনিধিদল ভুটানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া X-এ একটি পোস্ট শেয়ার করে এই তথ্য জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু X-এ লিখেছেন, 'ভগবান বুদ্ধের পবিত্র অবশেষ ফিরিয়ে আনার জন্য ভুটান যাচ্ছি। এটি ভারত-ভুটানের পারস্পরিক ঐতিহ্য এবং গভীর সাংস্কৃতিক সম্পর্কের প্রতীক।' ভুটান সরকার এই প্রদর্শনীটি এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন করেছিল। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ভুটানের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে বলেছে যে এই সিদ্ধান্ত দুই দেশের মধ্যে আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, ঐতিহ্য এবং বন্ধুত্বের অটুট সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
থিম্পুতে চলমান গ্লোবাল পিস প্রেয়ার ফেস্টিভ্যাল (Global Peace Prayer Festival) চলাকালীন আয়োজিত এই পবিত্র প্রদর্শনী ভুটানের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। হাজার হাজার ভক্ত এই অবশেষ দর্শন করেছেন এবং ভুটান সরকার এটিকে জনগণের আস্থার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে অভিহিত করেছে। এই আয়োজনটি ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিঙ্গে ওয়াংচুকের ৭০তম জন্মবার্ষিকীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক উৎসর্গও বটে।
এই অবশেষগুলি থিম্পুর তাশিছো জং-এর কুয়েনরে হলে স্থাপন করা হয়েছে, যা ভুটানের আধ্যাত্মিক এবং প্রশাসনিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগে (Dasho Tshering Tobgay) এই উপলক্ষে ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন, 'এই অবশেষ ভুটানের মানুষের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ভারত ও ভুটানের মধ্যে এই আধ্যাত্মিক অংশীদারিত্ব আমাদের বন্ধুত্বের সবচেয়ে পবিত্র রূপ।'
এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানটিকে সমৃদ্ধ করতে ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধিস্ট কনফেডারেশন (International Buddhist Confederation-IBC) দ্বারা তিনটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গুরু পদ্মসম্ভব, ভারতে বুদ্ধের জীবন ও পবিত্র স্থান ভ্রমণ, শাক্য ঐতিহ্যে বুদ্ধের অবশেষের আবিষ্কার ও গুরুত্ব এবং বুদ্ধের জীবন ও শিক্ষা। এর সাথে, নয়াদিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামের বৌদ্ধ গ্যালারি থেকে বিরল শিল্পকর্মও প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই প্রদর্শনীটি মঙ্গোলিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং রাশিয়ার আধ্যাত্মিক যাত্রার পরবর্তী অধ্যায়।