নৌবাহিনীর কর্মীদের হাত ধরেই শত্রু পক্ষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে গোপন তথ্য। আর তা আটকাতেই এবার নিজেদের কর্মী এবং আধিকারিকদের সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারতীয় নৌবাহিনী। শুধু
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার বন্ধ করাই নয়, এবার থেকে নৌবাহিনীর প্রত্যেকটি ঘাঁটি, ডকইয়ার্ড এবং জাহাজে স্মার্টফোনও ব্যবহার করা যাবে না। ফেসবুকে হানি ট্র্যাপে ফেলে আধিকারিক এবং কর্মীদের থেকে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক ঘটনা সামনে আসার পরই এই সিদ্ধান্ত নৌবাহিনী। ফলে এবার থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বা ইনস্টাগ্রামের মতো কোনও সোশ্যাল মিডিয়াই ব্যবহার করতে পারবেন না বাহিনীর সদস্যরা।
গত ২০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত গুপ্তচরদের একটি চক্রের পর্দাফাঁস করে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ, নৌবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি যৌথ দল। ফেসবুকের মাধ্যমে পাকিস্তানে নৌবাহিনীর গোপন তথ্য পাঠানোর অভিযোগে বাহিনীরই সাতজন কর্মী ও এক হাওয়ালা ব্যবসায়ীকে বিশাখাপত্তনমব এবং মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, নৌবাহিনীর জাহাজ এবং ডুবোজাহাজগুলির অবস্থান কোথায়, পাকিস্তানি হ্যান্ডলার-দের সেই তথ্য তুলে দিত নৌবাহিনীর ধৃত সদস্যরা।
সূত্রের খবর, ধৃত এই সাতজন নাবিকই ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ফেসবুকে হানি ট্র্যাপ-এ পা দেন তাঁরা। এর পর থেকেই ফেসবুকের মাধ্যমে গোপন তথ্য পাচার শুরু করেন অভিযুক্তরা।
আরও পড়ুন- পরমাণু আঘাত হানতে সক্ষম ছ'টি সাবমেরিন তৈরি করবে ভারত, শক্তি বাড়বে নৌবাহিনীর
অনলাইন সম্পর্কের টোপ দিয়ে প্রথমে ওই নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফাঁদ পাতা হয়। মহিলাদের সঙ্গে ওই নাবিকদের যে কথপোকথন গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে, তাতে স্পষ্ট যে অপিরিচিত মহিলাদের সঙ্গে ফেসবুকে যৌন আবেদনমূলক কথাবার্তা বলতেন ওই নাবিকরা। পরে ব্ল্যাকমেল করে তাঁদের থেকে জাহাজের অবস্থান নিয়ে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়। হাওয়ালা কারবারিদের মাধ্যমে প্রতি মাসে টাকাও পেতেন তাঁরা।
পুলিশ বিশাখাপত্তনম থেকে তিনজন, কারওয়ার নৌ ঘাঁটি থেকে দু' জন এবং মুম্বাই নৌ ঘাঁটি থেকে আরও দু'জন নাবিককে গ্রেফতার করে। এর পরই দেরি না করে দ্রুত কর্মী এবং আধিকারিকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে লাগাম টানল নৌবাহিনী।