
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবিদ্বেষের বলি তেলাঙ্গনার এক তরুণী প্রযুক্তিবীদ। নিহত তেলাঙ্গনার বাসিন্দা মহম্মদ নিজামুদ্দিন। পরিবারের সদস্যরা ছেলের নিথর দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকার ও তেলাঙ্গনার সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলি করে খুন করা হয়েছে মহম্মদ নিজামুদ্দিনকে।
মহম্মদ নিজামুদ্দিন ২০১৬ সালে ফ্লোরিডা কলেজে উচ্চশিক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তার পরিবার জানিয়েছে, কোর্স শেষ করার পর তিনি একটি কোম্পানিতে যোগ দেন এবং পরে পদোন্নতি পেয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান। এএনআই-এর সঙ্গে কথা বলার সময় নিজামুদ্দিনের বাবা বলেন, "আমার নাম মোহাম্মদ হাসানউদ্দিন। আমি মহবুবনগরের বাসিন্দা। আমাকে আজ জানানো হয়েছে যে আমার ছেলেকে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমার ছেলে ২০১৬ সালে ফ্লোরিডা কলেজে পড়াশোনা করতে আমেরিকায় গিয়েছিল। দুই বছরের পড়াশোনা শেষ করে সে সেখানকার একটি কোম্পানিতে কাজ করত। পরে, পদোন্নতি পেয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যায়, সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।"
শোকার্ত বাবা তার ছেলের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, "আমি ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের কাছে আবেদন করছি, যাতে আমার ছেলের দেহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।" মৃতের আরেক আত্মীয় বলেন, "আমরা আজ খবর পেয়েছি যে ছেলেটি মারা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার রিপোর্ট এবং আমাদের যা বলা হয়েছে, তাতে গত ১০-১৫ দিন ধরে তার কোনও খবর ছিল না, আর আজ আমরা এই খবর পেলাম।"
তিনি বলেন, বাড়িতে থাকা এসি বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের মেশিন নিয়ে ঝগড়া শুরু হ। পরে তা হিংসাত্মক রূপ নেয়। নিজামুদ্দিনকে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছিল। পরে গুলি করে খুন করা হয়ছে বলেও তারা জানতে পেরেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, এক প্রতিবেশী পুলিশকে ফোন করে সব খবর দেয়। যখন একজন ছেলে পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে, তখন পুলিশ গুলি চালায়, এবং সে মারা যায় — এটি একটি "অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক" ঘটনা।
তিনি বলেন, "বিবরণ অনুযায়ী, রুমমেটদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল — এসি বা ঘরের অন্য কিছু নিয়ে — এবং সেই হাতাহাতিতে ছুরি ব্যবহার করা হয়েছিল। এক প্রতিবেশী পুলিশকে ফোন করে। পুলিশ ঘরে ঢুকে বাসিন্দাদের হাত দেখাতে বলে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা আরও বলেছেন, পুলিশের নির্দেস একজন ছেলে নির্দেশ মেনেছিল; অন্যজন মানেনি। এরপর পুলিশ চার রাউন্ড গুলি চালায় এবং ছেলেটি গুলিবিদ্ধ হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনও সঠিক তদন্ত হয়নি এবং এত দ্রুত গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে।"
তিনি মৃতের দেহ ফিরিয়ে আনার আবেদন করে বলেন, "আমরা তেলেঙ্গানা সরকারের কাছেও মহবুবনগরে দেহটি নিয়ে আসার জন্য সাহায্যের অনুরোধ করছি। পরিবার এখনও সম্পূর্ণ তথ্য পায়নি।"