স্বাধীনতার ৭২ বছর পার করে প্রথম আদিবাসী মহিলা উপাচার্য পেল ভারত, নজির গড়লেন ঝাড়খণ্ডের কন্যা

  • ইতিহাস গড়ে ফেললেন আদিবাসী কন্যা সোনাঝরিয়া মিনজ
  • সিধো কানু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হলেন
  • স্বাধীন ভারতের প্রথম আদিবাসী উপাচার্য সোনাঝরিয়া মিনজ
  •  জেএনইউ-র কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপিকা ছিলেন তিনি

Asianet News Bangla | Published : May 30, 2020 8:32 AM IST / Updated: May 30 2020, 02:08 PM IST

ইতিহাস গড়ে ফেললেন দিল্লির জওহারলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সোনঝরিয়া মিনজ। ঝাড়খণ্ডের  সিধো কানু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিযুক্ত হলেন হলেন। সেইসঙ্গে নজির গড়ে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম উপাচার্য পদের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন কোনও আদিবাসী মহিলা৷ 

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ কম্পিউটার এবং সিস্টেমস সায়েন্সের অধ্যাপিকা ছিলেন সোনঝরিয়া মিনজ৷ তাঁকে ঝাড়খণ্ডের সিধো কানু মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্জ পদে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু৷ তিনি নিজেও আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছেন।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় মোদী সরকারের বর্ষপূর্তিতে দেশবাসীকে খোলা চিঠি , স্মরণ করলেন পরিযায়ীদের দুর্দশার কথাও

ঝাড়খণ্ড সরকার তাঁর নিয়োগের নোটিফিকেশন জারি করে বুধবার। তিনি তখন ছিলেন দিল্লিতে লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি। সেই খবর পেয়েই বৃহস্পতিবার বিশেষ বিমানের টিকিট  যোগার করে রাঁচি ফেরেন তিনি।  শুক্রবার তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মূ। সেই সঙ্গে ইতিহাস গড়ে স্বাধীন ভারতের প্রথম আদিবাসী উপাচার্য হলেন সোনাঝরিয়া মিনজ।

ঝাড়খণ্ডেই বেড়ে ওঠা সোনধরিয়ার। রাঁচির স্কুলেই পড়াশোনা শুরু তাঁর৷ স্কুলে ভালো রেজাল্ট করার পর চেন্নাই পাড়ি দেন। সেখানে মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে  গণিত নিয়ে ওই কলেজ থেকেই এমএসসি পাশ করেন মিনজ। এরপর রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে সোনাঝ‌রিয়া ১৯৮৬ সালে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে ভর্তি হন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। জেএনইউ  থেকে এমফিল ও পিএইচডি করে সেখানেই কয়েক বছর অধ্যাপনা করেন তিনি। কিন্তু এই দীর্ঘ পথ পেরনো একেবারেই সহজ ছিল না এই অদিবাসী কন্যার কাছে৷ স্কুলে পড়ার সময় বহুবাপ হেনস্থা হতে হয়েছে তাঁকে। শিক্ষকদের কাছে শুনতে হয়েছে, “তোমার দ্বারা কিছু হবে না।”

আরও পড়ুন: ফের আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন রেকর্ড ভারতের, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শিকার প্রায় ৮ হাজার

আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য হওয়ায় অনেকেই বাঁকা চোখে দেখতেন তাঁকে৷ ইংরেজি ভাষার প্রতি অনর্গল দক্ষতার অভাবেও অনেক বার বিরূপ মন্তব্য শুনতে হয়েছে মিনজকে৷ কিন্তু হার মানেননি কন্যা৷ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, পড়াশোনা করে তিনি সকলকে দেখিয়ে দেবেন৷ বুঝিয়ে দেবেন, তাঁরাও পারেন। এই হার না মানা মনোভাব এবং মেধার জোরে ভালো রেজাল্ট করেন মিনজ, প্রমাণ করেন নিজেকে৷ 

আজ আদিবাসী সমাজের মহিলারা কোনও অংশে পিছিয়ে নেই৷ প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের প্রমাণ করেছেন তাঁরা৷ খেলাধুলোর দুনিয়ায় কান পাতলেই শোনা যায় বহু আদিবাসী মহিলার নাম৷ রেডিও জকি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন শিখা মান্ডিকে। আবার বিমান ওড়াচ্ছেন ওড়িশার লক্ষ্মীপ্রিয়া। ঝাড়খণ্ডে রাজ্যপালের পদ সামলাচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু। সাফল্যের এই তালিকায় জুড়ল আরও একটি নাম, সোনাঝরিয়া মিনজ৷ সোনাঝরিয়া মিনজের বাবা লুথেরান বিশপ এমেরিটাস নির্মল মিনজ ছিলেন আদিবাসী সমাজের ভাষাশিক্ষক। তিনি রাঁচিতে গসনার কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ওঁরাওঁ উপজাতির কুদুখ সম্প্রদায়ের ভাষার উন্নয়নে তাঁর অবদানের জন্য ২০১৬ সালে ভাষা সম্মানেও সম্মানিত করা হয়েছিল নির্মল মিনাজকে৷ 

Share this article
click me!