গোটা দেশ যখন করোনার সঙ্গে লড়াই করছে তখন এক মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী থাকল ঝাড়খণ্ডের গিরিডি। এখানকার রাজধনবর থালা এলাকার পূরকাহ কালা খুরদ গ্রামে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল এক মা ও তার ৩ সন্তানের। গত মঙ্গলবারের এই ঘটনা ঘিরে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। এই নৃশংস ঘটনার জন্য নিজের জামাইকেই দায়ী করছেন মৃতার বাবা। ইতিমধ্যে জামাই ও মহিলার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের কেরেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: মা ও ৩ সন্তাদের জ্বলন্ত দেহ ঘিরে চাঞ্চল্য, ২ শিশুর ঝলসানো শরীর মিলল বাক্সবন্দি অবস্থায়
গিরিডির খোরিমহুয়ার উপ-বিভাগীয় পুলিশ আধিকারিক নবীন কুমার সিংহ জানান, পূরকাহ কালা খুরদ গ্রামে রবীন্দ্র যাদবের স্ত্রী সোনিয়া দেবী ও তাঁর ৩ সন্তানের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। ৩ সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির নাম দিলীপ কুমার, যার বয়স ছিল ৮ বছর। অগ্নিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সনিয়ার ৫ বছরের মেয়ে সুমন কুমারী ও ২ বছরের ছেলেরও। এদের মধ্যে বুধবার সকালে সোনিয়ার মৃত্যু ধনবর হাসপাতালে হলেও ৩ সন্তানের মৃত্যু ঘটনা মঙ্গলবার রাতেই ঘটে।
মৃতদেহগুলির ময়না তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই মৃতার স্বামী ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক বলে জানা যাচ্ছে। সোনিয়ার বাপেরবাড়ির অভিযোগ তাঁর উপর বিয়ের পর থেকেই নির্যাতন চালাত শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তারাই তাঁকে ও তাঁর সন্তানদের জ্বালিয়ে মেরেছে।
আরও পড়ুন: আর প্রিন্স হওয়া হল না, ৭০ ফুট গভীর কুয়োর পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু ৩ মহিলাসহ ৪ শ্রমিকের
অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ি এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি সোনিয়া নিজেই আগুন লাগিয়ে ৩ সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শওনা যাচ্ছে ঘটনার দিন দুধ নিয়ে নিজের বড় জায়ের সঙ্গে ঝামেলা হয় সোনিয়ার। এরপরেই ঘরে গিয়ে দরজা আটকে আগুন লাগান। পরের দিন সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা সোনিয়ার ঘর থেকে আগুন ও ধোয়া বেড়োতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে হাজির হন তাঁরা। দেখা যায় ঘরের বাইরে থেকে তালা ঝুলছে। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ দেখতে রান তারা। এক সন্তানের দেহ পড়েছিল বিছানার উপর।আর ২ সন্তানের দেহ পাওয়া যায় ঘরের ভিতরে থাকা একটি বাক্সতে।
এক প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, সোনিয়ার বাবার কাছে সোমবার রাতে ফোন করেছিল তাঁর ভাশুর। মেয়ে ঝগড়া করছে এই দাবি করে তাঁকে বাপের বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।