কর্ণাটক নির্বাচনে যে অপরাধের মাত্রা প্রবলভাবে বৃদ্ধি পাবে তা আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কর্ণাটকের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সময়ই কড়া হাতে আইনশৃঙ্খলা মোকাবিলার নির্দেশও দিয়েছিল কমিশন।
একসঙ্গে মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং তাঁর স্ত্রী-সহ পুরো পরিবারকই খতম করার ষড়যন্ত্র, এই অভিযোগ তুলে এখন জাতীয় রাজনীতিতে শোরগোল মাচিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। ১০মে কর্ণাটক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। হাতে গোনা আর মাত্র কয়টা দিন। তারমধ্যে শনিবার ফের বেঙ্গালুরুতে রোড শো করছেন নরেন্দ্র মোদী। এমনই এক উত্তেজনাকর পরিবেশে, কংগ্রেস এমন এক অভিযোগ করেছে যা চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, খাড়গে ও তাঁর পরিবারকে হত্যার চক্রান্তের পিছনে যিনি রয়েছেন তিনি এক বিজেপি প্রর্থী। কংগ্রেস তাদের অভিযোগের স্বপক্ষে একটা ভাইরাল অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেছে। যদিও, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
কংগ্রেসর অভিযোগ মণিকান্ত রাঠোড় নামে এই ব্যক্তি চিত্তপুর বিধানসভা থেকে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন। যার বিরুদ্ধে অন্তত ৪০টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে বলেও অভিযোগ। কংগ্রেসের অভিযোগ মণিকান্ত নরেন্দ্র মোদী এবং কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই-এর নয়ণের মণি। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, তারা যে অডিও ক্লিপটি সমক্ষে নিয়ে এসেছে তাতে মণিকান্তকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে সে খাড়গে ও তাঁর পরিবারকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দিতে চায়। টুইটারে এই ভাইরাল অডিও ক্লিপ পোস্ট করে কংগ্রেস লিখেছে, মণিকান্তর বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ থেকে শুরু করে অন্ন ভাগ্য চালের পাচারচক্র চালানো, মাদক ও নেশাযুক্ত জিনিসের চোরাচালান করা, বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের বেচাকেনা এবং অপরাধ সংঘটিত করার মতো অভিযোগও রয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, কর্ণাটক নির্বাচনে বিজেপি-র যে পরাজয় হচ্ছে তা নিশ্চিত, আর সেইকারণে ঘৃণার রাজনীতি করে মল্লিকার্জুন খাড়গের মতো জাতীয় নেতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
যদিও, মণিকান্ত রাঠোড় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন। এমনকী ভাইরাল অডিও-তে যে কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে সেটা তার নয় বলেও দাবি করেছেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানানো হবে বলেও কংগ্রেস সূত্রে খবর।
কর্ণাটকে ভোটগ্রহণ ১০ মে। ১৩ মে ভোট গণনা। কংগ্রেস ভোটের ময়দানে এগিয়ে থাকার দাবি করলেও, অধিকাংশ জনমত সমীক্ষাই বিজেপি-কে এগিয়ে রেখেছে। এমনকী, ২২৪টি আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে অন্তত ৯৮ থেকে ১১৫টি আসন যাবে বলেও জনমত সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। আর কংগ্রেসের ঝুলিতে নাকি ৯০ থেকে ৯৮টি আসন যেতে পারে বলে জনমত সমীক্ষাতে দাবি করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এই নিয়ে চিন্তিত হতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনেই কর্ণাটকের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে যে তাঁরা বিজেপি-র সঙ্গে নেই। কিন্তু, পরে বিধায়ক কেনাবেচা করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গঠিত সরকারকে ফেলে দিয়েছিল বিজেপি, এমন অভিযোগও করেছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর দলের দাবি, এবারের নির্বাচন বিজেপি-র স্থবির এবং উন্নয়নহীন সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ভোট। আর জনতা জনার্দনের রায় তাদের দিকে যাবে বলেই দাবি কংগ্রেস।