কর্ণাটকে কংগ্রেসের সাফল্যের বড় কারণ হল রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা। পাশাপাশি নির্বাচনী ইস্তেহারে সাধারণ মানুষের মত করে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।
কর্ণাটকের ভোট যুদ্ধে বিজেপিকে পিছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে কংগ্রেস। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার রাস্তা পরিষ্কার। এই অবস্থায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী জানিয়ে দেন, কর্ণাটকে শক্তিও ক্ষমতাকে পরাজিত করেছে। কর্ণাটকে কংগ্রেসের পাহাড় প্রমাণ সাফল্যের কারণও অনুসন্ধান করা শুরু হয়েছে। কারণ এই রাজ্যে কংগ্রেসের সাফল্য আগামী দিনে দেশের রাজনীতির ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
কর্ণাটকে কংগ্রেসের সাফল্যের সেরা ১০টি কারণ
১. কংগ্রেস নেতাদের কথায় কর্ণাটকে কংগ্রসের সাফল্যের পিছনে রয়েছে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর কর্ণাটকের চামরাজানগরে জেলার গুন্ডলুপেটে প্রবেশ করে। তারপর টানা ২২ দিনে এই রাজ্যের ৫০০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
২. রাহুল গান্ধীর এই ভারত জোড়ো যাত্রার তীব্র সমালোচনা করে বিজেপি। বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে ভারত জোড়ো যাত্রার বিরুদ্ধে প্রচারও করা হয়। কিন্তু তারপরেই এই যাত্রায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
৩. প্রচারে কংগ্রেস প্রথম থেকেই দুর্নীতি ইস্যুতে অনড় ছিল। কর্ণাটক ৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার চলে বলে কংগ্রেস যে অভিযোগ তুলেছিল প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই অনড় ছিল। দুর্নীতির অভিযোগে কর্ণাটকের রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি দিল্লির নেতৃত্বকেও টেনে এনেছিল কংগ্রেস।
৪. ভোট প্রচারে কংগ্রেস কর্ণাটকের সমস্য়াগুলিকে বেশি উল্লেখ করেছিলেন। সাধারণ মানুষের চাওয়াপাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েছিল।
৫. প্রচারের মতই ইস্তেহারেও কংগ্রেস সাধারণ মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়েছিল। যদিও ত্রিপুরা-সহ একাধিক রাজ্যে একই পথে হেঁটেছিল কংগ্রেস। কিন্তু কর্ণাটকের সাফল্য এই বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে দল।
৬. কর্ণাটকের ভোট কংগ্রেসের একতার ছবি ধরা পড়েছিল। কর্ণাটক প্রদেশ কমিটির প্রধান ডিকে শিবকুমার গোটা দলকেই একই ছাতার তলায় আনতে পেরেছিলেন। প্রথার থেকে শুরু করে ভোটের বাকি কাজেও গুরুত্ব দিয়েছেন দলীয় ঐক্যক্য।
৭. রাহুল গান্ধী ছিলেন কর্ণাটক নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেসের সবথেকে বড় হাতিয়ার। সদ্যোই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছিল। যা তিনি রাজ্যের মানুষের কাছে উপস্থিত করেছিলেন। পাশাপাশি আদানিদের সঙ্গে তার জুড়ে দিয়ে কর্ণাটকের সাধারণ মানুষের সমবেদনা আদায় করতে সফল হয়েছিলেন।
৮. কর্ণাটকে কংগ্রেস রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়কে এক ছাদের তলায় আনার চেষ্টা করেছিল। রাহুল গান্ধীর উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল। লিঙ্গায়েত থেকে ভোক্কালিগা, ওবিসি থেকে মুসলিম সকলের কাছেই সমান ভাবে যাওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন।
৯. কংগ্রেসের ইস্তাহারে ছিল উন্নয়নের বার্তা। পাশাপাশি কাজের সুযোগ তৈরির পরিকল্পনা। কর্ণাটকে তরুণ ভোটারের সংখ্যা ১১ লক্ষেরও বেশি। যাদের টানতে বিষের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল কংগ্রেস।
১০. কর্ণাটকে মহিলা ভোটের জন্য বিশেষ প্রতিশ্রুতি ছিল নির্বাচনী ইস্তেহারে। মাসে ২ হাজার টাকা ও মহিলাদের বাস বিনামূল্যে যাতায়াত। এই রাজ্যে প্রভাবিত করেছে বলেও মনে করছে দলের একটি অংশ।