দেশে বেড়েই চলেছে সংক্রমণের হার। প্রতিদিনই রেকর্ড গড়ে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন মারণ করোনাভাইরাসে। বুধবার সকালেই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লক্ষ পেরিয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন ৪ চলছে গোটা দেশে। যদিও এবারের লকডাউনে বেশকিছু নিয়মে শিথিলতা এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে বন্ধ রয়েছে মন্দির, মসজিদ, গির্জার মত ধর্মীয়স্থানগুলির দরজা। সেকরাণে চলতি বছর ঈদের নমাজও মৌলবীরা সকলকে বাড়ি থেকে পরার নির্দেশ দেন। তবে এবার এই নিয়মে শিথিলতা আনার পথে এগোচ্ছে কর্ণাটক সরকার। শোনা যাচ্ছে লকডাউন শেষ হলেই রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় স্থান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইয়েদুরাপ্পার প্রশাসন।
লকডাউন ৪-এর সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৩১ মে। আর ১ জুন থেকে কর্ণাটকে খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। দেশে করোনাভাইরাসের কারণে চলা লকডাউনের মধ্যে এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকার ধর্মীয় স্থান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিল। দেশে লকডাউন জারি হওয়ার পর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ধর্মীয়স্থানগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউনের মেয়াদ যেহেতু আগামী ৩১ মে শেষ হওয়ার কথা, সে দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্নাটক রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে খুব শীঘ্রই একটি স্ট্যান্ড্রার্ড অপারেটিং প্রোটোকল বা এসওপি জারি করা হবে।
সপ্তাহ কয়েক আগে লকডাউনের মধ্যেই কর্নাটকের রামনগর জেলার কালাগোন্ডাহাল্লি গ্রামের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় কোনো রকমের স্বাস্থ্যসুরক্ষার নিয়ম না মেনেই কয়েক হাজার মানুষ ওই অনুষ্ঠানে জড়ো হন। গ্রামের সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ন্যূনতম মাস্ক ব্যবহার করতেও দেখা যায়নি কাউকে। পরে বিতর্কে বিদ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসন মন্দিরের পূজারিকে গ্রেফতার করে। এর পরেই ইয়েদুরাপ্পা সরকার অনলাইনে পুজো চালু করে কর্নাটকে। এখন ১ জুন থেকে কর্ণাটক সরকার মন্দির খুলে দেওয়ার পথে এগোল।
মঙ্গলবারই বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মন্দির খোলার। ২৪ মার্চ দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কর্নাটকের সব মন্দির বন্ধ৷ মন্দিরে পুজো ও ভক্ত সমাগম বন্ধ থাকায় গত দু মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়নি কর্নাটক সরকারের৷ রাজ্যের মন্ত্রী কোটা শ্রীনিবাস পূজারি জানিয়েছেন, মন্দির খুলেও সামাজিক দূরত্ব মেনেই পুজো হবে৷ ভক্তরাও সামাজিক দূরত্ব পালন করবেন৷ এদিকে মন্দিরের পাশাপাশি মসজিও ও গির্জার দরজাও এবার খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় কর্ণাটকে নতুন করে করোনা সংক্রমমের শিকার হয়েছেন শতাধিক। ফলে রাজ্যটিকে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ২,২৮২-তে। এখনও পর্যন্ত মারণ ভাইরাসে দক্ষিণের এই রাজ্যে প্রাণ কেড়েছে ৪৪ জনের। দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কর্ণাটকের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করে আসছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। নতুন করে আক্রান্তদের অধিকাংশই ভিনরাজ্য থেকে আসা বলে জানান হয়েছে।