
জম্মু ও কাশ্মীর: গত সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় সীমান্ত পার থেকে ছোঁড়া মর্টার শেলের আঘাতে ১২ বছর বয়সী যমজ সন্তান জোয়া এবং আয়ান খানের মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে তাদের চাচা-চাচীও নিহত হয়েছিলেন।
যমজ সন্তানেরা গত মাসেই তাদের ১২তম জন্মদিন পালন করেছিল। ৭ মে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুজনেরই মৃত্যু হয়। ভালো শিক্ষার সুযোগের আশায় তাদের পরিবার দুই মাস আগেই পুঞ্চে এসেছিল। তাদের বাবা ৪৮ বছর বয়সী রমিজ খান গোলাবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি জম্মুর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি। তাকে সন্তানদের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি। তিনি বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছেন।
রমিজ খানের লিভারে ছররা লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আত্মীয়স্বজনরা বলেছেন, তাকে আরও বেশি মানসিক আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য তার সন্তানদের মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়েছে। তাদের মা উর্ষা খান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। একদিকে সন্তানদের হারানোর বেদনা, অন্যদিকে স্বামীকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দেখার যন্ত্রণা।
পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় মারিয়া এবং সোহেল খান এই ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। কান্নায় ভেঙে পড়ে মারিয়া বলেন, "জোয়া খুব খারাপভাবে আহত হয়েছিল। আয়ানের অন্ত্র বেরিয়ে এসেছিল। আমাদের এক আত্মীয় তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। আমরা ভেবেছিলাম সে বেঁচে যাবে, কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে।"
সোহেল বলেন, "আমরা ভীত ছিলাম। কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাবর্ষণ চলেছে। হাসপাতালে পৌঁছাতে অনেক ঘণ্টা লেগেছে। প্রথমে রাজৌরি, তারপর জম্মু।" পরিবার সরকারের কাছে রমিজ খানকে দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর আবেদন করেছে।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতে ৬-৭ মে রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী অপারেশন সিন্দুর চালায়। এরপর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিন ধরে সামরিক সংঘর্ষ হয়। পাকিস্তান LoC এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে। এর ফলে ভারতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান। পাকিস্তানের বোমা হামলা এবং ড্রোন হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছে।