পরিকল্পনা করেছিলেন নিখুঁত ভাবেই। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। স্ত্রীকে খুনের অপরাধে অবশেষ গ্রেফতারই হতে হল কেরলের ব্যাঙ্ককর্মী সুরজকে।
বছর দুয়েক আগে কোল্লামের বাসিন্দা বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী সুরজের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল উত্তরার। যৌতুক হিসাবে শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রচুর অর্থ ও একশো ভরির উপর সোনার গয়না পেয়েছিল সুরজ। জানা যাচ্ছে, সেই বিপুল সম্পত্তি হাতানোর জন্যই নিজের ঘুমন্ত স্ত্রীর উপর বিষধর গোখরো সাপ ছেড়ে খুন করল সুরজ।
গত ৭ মে কোল্লামের বাড়িতে উত্তরার সাপে কাটা নিথর দেহ উদ্ধার হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানা যায়, সাপের কামড়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তখনি সন্দেহ হয় উত্তরার বাপের বাড়ির লোকেদের। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। কারণ, গত মার্চ মাসে একইরকম ভাবে সাপের ছোবল খেয়েছিলেন উত্তরা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতেই উত্তরাকে মারার পরিকল্পনা করেছিল ২৭ বছরের সুরজ। সেই কারণে এক বন্ধু সাপুড়ে সুরেশের থেকে চন্দ্রবোড়া কিনেছিল সুরজ। কিন্তু সেবারর সাপের ছোপল খেয়েও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিল উত্তরা। হাসপাতালে একমাস চিকিৎসা চলার পর সুস্থ হয়ে বাপের বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি।
এদিক প্রথম পরিকল্পনা বিফলে যাওয়ার পর নতুন করে গুটি সাজিয়েছিল সুরজ। এবারও গা শিউরে ওঠার মতো খুনের ছক কষেছিল সে। সেই মতো গত এপ্রিলেই বন্ধু সুরেশের থেকে এক বিষধর গোখরো কিনেছিল সে। এবার যাতে পরিকল্পনা ভেস্তে না যায় তার জন্য নিয়মিত ইন্টারনেটে সাপের ভিডিও দেখত সুরজ। এরপর গত ৬ মে রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীর ওপর কোবরাটি ছেড়ে দেয় সে ৷ আর নিজে খাটের ওপর বসে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে কীভাবে সাপটি তার বউকে ছোবল মারছে ৷ সাপটি উত্তরাকে দুবার কামড়ায় ৷ ওই অবস্থাতেই সারারাত মৃত স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে কাটায় সুরজ।
৭ মে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পান উত্তরার বাবা-মা। এদিকে স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পরেই উত্তরার সম্পত্তির উপর অধিকার ফলাতে যায় সুরজ। বিষয়টি নিয়ে রহস্য ঘণীভূত হতেই জামাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন উত্তরার বাবা-মা। সুরজ ও উত্তর একটি এক বছরের পুত্র সন্তানও রয়েছে।
উত্তরাকে কামড়ানোর পরে সুরজ সাপটিকে ঝোলায় পুরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই গোখরো পালিয়ে যায়। সুরজ সারা রাত সাপটিকে খোঁজাখুজি করে। পরে
সুরজের কোল্লামের বাড়ি থেকেই সাপটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যাচ্ছে অন্য কাউকে বিয়ের পরিকল্পনা করেছিল সুরজ। সেই কারণেই উত্তরার বিপুল সম্পত্তি কুক্ষিগত করে তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষেছিল ব্যাঙ্কার সুরজ।