ভারতীয় সমাজে ২০২৪ সালেও সন্তানের উপর শুধু মা-বাবারই নয়, পরিবারের সবার অধিকার থাকে। এই কারণেই কেরালার এক মহিলা শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অনেক পরিবারের লোকজনই বধূর কাছ থেকে পুত্রসন্তান কামনা করেন। কিন্তু কেরালার একটি পরিবার শুধু পুত্রসন্তানই নয়, 'ভালো' পুত্রসন্তানের আবদার জানাতে শুরু করে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই মহিলাকে 'ভালো' পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়ার বিষয়ে পাঠ দিতে শুরু করেন। এই মহিলার হাতে একটি খাতা তুলে দেওয়া হয়। 'সন্তানের জন্ম দেওয়ার আগে লিঙ্গ নির্ধারণের প্রক্রিয়া' লেখা রয়েছে সেই খাতায়। এভাবেই 'ভালো' পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়ার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছিল। এটা সহ্য করতে না পেরে কেরালা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা। তিনি স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মামলার শুনানিতে হতবাক হাইকোর্ট
এই মহিলার আবেদন শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছেন কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবন রামচন্দ্রন। তিনি মৌখিকভাবে বলেছেন, 'এই মামলায় আমরা হতবাক।' বিচারপতি আরও বলেছেন, এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হচ্ছে। তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ব্যবস্থা নিতে পারে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতি।
কন্যাসন্তান পরিবারের উপর বোঝা!
যে মহিলা শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি জানিয়েছেন, ২০১২ সালে বিয়ে হয়। তাঁর আরও দাবি, যেদিন বিয়ে হয় সেদিনই তাঁর হাতে খাতা তুলে দেওয়া হয়। সেদিনই তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পরিবারের উপর বোঝা হয়ে দাঁড়ায় কন্যাসন্তান। সেই কারণেই তাঁকে 'ভালো' পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য শিক্ষা দেওয়া শুরু হয়। ঠিক কী সময় এবং কীভাবে যৌন সংসর্গ করলে পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়া যাবে, সে বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ২০১৪ সালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পুত্রসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ান বলে অভিযোগ। এই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন এই মহিলা।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
পুত্রসন্তান লাভের আশায় ৭ বছরে ৭বার গর্ভপাত করানো হল গৃহবধুর
কন্যাসন্তান হওয়ার শাস্তি, গৃহবধূকে কীটনাশক দিয়ে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ