২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'-এর প্রধান অমৃতপাল সিং-এর নাম। দু'বছরে একাধিকবার পুলিশকে ফাঁকি-সহ নানা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে অমৃতপালের। দুবাই থেকে ডিব্রুগড় জেল।
রবিবার সকালে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিং। পঞ্জাবের মোগা জেলার রদে গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রকাশ্যে এসেছে গ্রেফতারির ছবিও। চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ফেরার ছিলেন 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'-এর প্রধান অমৃতপাল। গ্রেফতারির যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে তার পরনে সাদা কুর্তা এবং মাথায় হলুদ পাগড়ি দেখা যাচ্ছে। পঞ্জাব প্রসাশন সূত্রে জানা যাচ্ছে অমৃতপালযেঁ আপাতত অসমের ডিব্রুগড়ে নিয়ে যাওয়া হবে। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেই জেলবন্দী 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'-এর আরও আট কর্মী। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার সকালে টুইট বার্তায় অমৃতপালের গ্রেফতারির কথা জানায় পঞ্জাব পুলিশ। রাজ্যবাসীর কাছে কোনও ধরণের গুজবে কান না দিতে এবং শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে অনুরোধও করা হয়েছে পুলিশের তরফে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'-এর প্রধান অমৃতপাল সিং-এর নাম। দু'বছরে একাধিকবার পুলিশকে ফাঁকি-সহ নানা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে অমৃতপালের। দুবাই থেকে ডিব্রুগড় জেল। দেখে নেওয়া যাক আট মাসের যাত্রা।
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১: সন্দীপ সিং সিধু ওরফে দীপ সিধু পাঞ্জাবের অধিকারের জন্য এবং এর সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' গোষ্ঠী তৈরি করে কাজ শুরু করেন।
ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২: কৃষক আন্দোলনে প্রথমবার শিরোনামে আসেন দীপ সিধু। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২-এ একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর।
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২: দীপ সিধুর মৃত্যুর সাত মাসের মাথায় 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' প্রধান নিযুক্ত হন অমৃতপাল সিং।
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩: অপহরণ, মারধর এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগে অমৃতপাল সিং এবং লাভপ্রীত সিং ওরফে তুফানের বিরুদ্ধে আজনালায় FIR দায়ের করা হয়।
ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩:লাভপ্রীত সিং ওরফে তুফানকে গ্রেফতার করে আজনালা পুলিশ।
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩: অমৃতপাল এবং তার সমর্থকরা আজনালা থানা ঘেরাও করে। তুফানের মুক্তির দাবিতে শুরু হয় অবরোধ। চাপের মুখে তুফানকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩:বিচারবিভাগীয় হেফাজত থেকে মুক্তি পেলেন তুফান। সরকারী কর্মচারীকে তার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে পুলিশ গোপনে খুনের চেষ্টা, হামলা বা অপরাধমূলক শক্তির অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করে।
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩: অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারির পরিকল্পনা শুরু করে পঞ্জাবের ভগবন্ত মান সরকার। এই মর্মে উচ্চপদস্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ডিজিপি গৌরব যাদব।
মার্চ ২, ২০২৩:'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' প্রধান অমৃতপাল সিং ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এবং ডিজিপি পাঞ্জাব গৌরব যাদব নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন। শাহ মানকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী পাঠানো সহ কেন্দ্র থেকে সমস্ত সম্ভাব্য সাহায্যের আশ্বাস দেন।
মার্চ ১৭, ২০২৩:অমৃতসরের G-20 সভা শেষ হওয়ার সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকদের অমৃতপাল এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী ক্র্যাকডাউন বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মার্চ ১৮, ২০২৩: আটটিরও বেশি জেলার পুলিশ অমৃতপালের একটি অশ্বারোহী বাহিনীকে অমৃতসর থেকে ভাটিন্ডা পর্যন্ত তাড়া করতে শুরু করে। জলন্ধর জেলার মেহতপুরে অশ্বারোহী বাহিনীকে আটক করা হয় এবং অমৃতপালের সাত সহযোগীকে আটক করা হয়। একই দিনে তার চার সমর্থককে আসামের ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মার্চ ১৯, ২০২৩:দ্বিতীয় দিনের অভিযানে আরও ৩৪ জনকে গ্রেফতার করে পঞ্জাব পুলিশ।
মার্চ ২০, ২০২৩: অমৃতপালের চাচা হারজিত সিং এবং তার ড্রাইভারকে জলন্ধরের শাহকোট থেকে গ্রেফতার করা হয়। হারজিতের বিরুদ্ধে এনএসএ-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়। আসামের ডিব্রুগড় জেলে পাঠানো হয় তাদের।
মার্চ ২৮, ২০২৩: একটুর জন্য পুলিশের হাত ফস্কে যায় অমৃতপাল সিং। হোশিয়ারপুর জেলায় অমৃতপাল ও তার বন্ধু পাপ্পালপ্রীত সিং-কে দেখা যায়।
এপ্রিল ১০, ২০২৩: পাপলপ্রীতকে অমৃতসর জেলা থেকে গ্রেফতার করে পাঞ্জাব পুলিশ।
এপ্রিল ২৩, ২০২৩: রবিবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিং। পঞ্জাবের মোগা জেলার গুরুদ্বারের সামনে থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশের পক্ষ থেকে আপতত শুধু জানানো হয়েছে তাকে অসমের ডিব্রুগড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।