তিনি ১৯৯৭ সালে রায়রাংপুর নগর পঞ্চায়েত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং জিতেছিলেন। মুর্মু তখন বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মঙ্গলবার বিজেপি পার্লামেন্টারি বোর্ড রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন এনডিএ-এর প্রার্থী হিসাবে ওডিশার দলের আদিবাসী নেতা দ্রৌপদী মুর্মুর নাম প্রস্তাব করেছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা দলের শীর্ষস্থানীয় সভা শেষে একটি সংবাদ সম্মেলনে তার নাম ঘোষণা করেন।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন গভর্নর ৬৪ বছর বয়সী মুর্মু নির্বাচিত হলে প্রথম আদিবাসী মহিলা হবেন যিনি শীর্ষ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত হবেন। মুর্মুর রাষ্ট্রপতি পদে বসার সম্ভাবনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে কারণ বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র ভাল ও মজবুত অবস্থান। নির্বাচিত হলে, তিনি ওডিশা থেকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিও হবেন।
বিরোধীরা এর আগে যশবন্ত সিনহাকে এই পদে তাদের যৌথ প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে। ১৮ জুলাই ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালের ২০জুন, জন্মগ্রহণকারী দ্রৌপদী মুর্মু ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা তিনি। একটি উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করা মুর্মু চরম দরিদ্র পরিস্থিতি সত্ত্বেও তার পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি ভুবনেশ্বরের রামাদেবী মহিলা কলেজ থেকে আর্টসে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। ওডিশার রাজনীতিতে প্রবেশের আগে, তিনি শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টার, রায়রাংপুরে বিনা বেতনে শিক্ষকতা করতেন।
তিনি ১৯৯৭ সালে রায়রাংপুর নগর পঞ্চায়েত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং জিতেছিলেন। মুর্মু তখন বিজেপির তফসিলি উপজাতি মোর্চার সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০০০ এবং ২০০৯ সালে ময়ূরভাজের রায়রংপুর থেকে বিজেপির টিকিটে দুবার বিধায়ক হয়েছিলেন। তিনি তার রাজনৈতিক কর্মজীবনে দলের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
মুর্মু ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরের এসটি মোর্চার জাতীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি ওড়িশার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যেমন পরিবহন ও বাণিজ্য পরিচালনা করেছেন এবং মৎস্য, পশুপালন ইত্যাদির মতো একাধিক বিভাগে কাজ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই দ্রৌপদী মূর্মূ-কে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী দ্রৌপদী মূর্মূ-র প্রার্থীপদ ঘিরে যথেষ্ট আশা প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মতে, দ্রৌপদী মূর্মূ-র নেতৃত্ব পেলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে এবং দেশবাসী এক অসামান্য নেত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে দেখার সুযোগ পাবে।
দ্রৌপদী মূর্মূকে যে প্রার্থী করা হতে পারে তার একটা আলোচনা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজধানী দিল্লির রাজনৈতিক অন্দরমহলে গুনগুন করছিল। দ্রৌপদী মূর্মূ-র প্রার্থী পদ এতটাই জোর আলোচনায় ছিল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে যোগ দেওয়া থেকে পিছিয়ে যায় বিজেডি। কারণ, দ্রৌপদী ওড়িশার ভূমিপূত্রি এবং একটা সময় ওড়িশার জোট সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন। ২০০০ সালে ওড়িশায় বিজেপি ও বিজেডি-র যে জোট সরকার হয়েছিল তার মন্ত্রী ছিলেন দ্রৌপদী। পরবর্তীকালে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের দায়িত্বভারও গ্রহণ করেছিলেন।