এর আগে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের মুখে শোনা গিয়েছিল-- 'গুলি মারদো'। দিল্লির বিধানসভা ভোটে যার খেসারত দিতে হয়েছিল দলকে। আবারও দেশদ্রোহীদের তাক করে গুলি মারার কথা শোনা গেল আর এক বিজেপি নেতার মুখে। তবে একটু ঘুরিয়ে। এবার কার্যত আইনের হাতেই 'গুলি করে মারা'র গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিলেন কর্নাটকের আইনমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিসি পাতিল।
দিনকয়েক আগে বেঙ্গালুরুতে সিএএ-বিরোধী সভায় এক যুবতীকে বলতে শোনা গিয়েছিল-- পাকিস্তান জিন্দাবাদ। পুলিশ তাঁকে ওই সভা থেকেই আটক করে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনার পর প্রায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্য়েই কর্নাটকের আইনমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল 'গুলি করে মারা'র কথা। আর সেই দায়িত্ব তিনি আইনের হাতেই চাপালেন কার্যত। যাতে রীতিমতো বিস্মিত আইনজীবী মহল। কারণ, কোনও সভ্য় দেশে কেউ যদি অপরাধী প্রমাণিতও হয়, তাহলে তাকে সাজা দেওয়ার নানা পথ খোলা আছে আইনে। কিন্তু আইনে কোথাও কোনও দোষীকে গুলি করে মারার কোনও বন্দোবস্ত নেই, অন্তত কোনও গণতান্ত্রিক দেশে। আর কাউর তা জানা থাকুন-না-থাকুক, আইনমন্ত্রীর তা বিলক্ষণ জানা।
কী বলেছেন কর্নাটকের আইনমন্ত্রী?
সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিসি পাতিল বলেন, "আমার মনে হয় দেশে এমন আইন আনা দরকার যেখানে দেশ সম্বন্ধে খারাপ কথা বলে পাকিস্তানের পক্ষে স্লোগান তুললে সেই ব্য়ক্তিকে দেখা মাত্র গুলি করে দেওয়া হবে।"
পাতিলের কথায়, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন বিশ্বাসঘাতকদের জন্য় আরও কঠিন আইন যাতে আনা হয়।
সেইসঙ্গে পাতিলের সংযোজন, "ওরা (দেশদ্রোহীরা) দেশের খাবে-পরবে, দেশের জল-বাতাস উপভোগ করবে। তাও কেন পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে স্লোগান দেবে? চিনে নাগরিকরা দেশের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায়। আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, বিশ্বাসঘাতকদের মোকাবিলা করতে আরও কঠিন আইন আনা হোক।"
প্রসঙ্গত, এর আগে দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের মুখে শোনা গিয়েছিল, "(দেশদ্রোহীদের) গুলি মার দো"। যার জন্য় শুধু নির্বাচন কমিশনের ধমকই নয়, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনেও দলকে গোহারান হারতে হয়েছে বলে মনে করছেন শীর্ষ স্থানীয় বিজেপি নেতারাই। রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার তাই সরাসরি গুলি মারার কথা না-বলে, ঘুরপথে আইনের হাতেই গুলি মারার গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে বিজেপি নেতা কর্নাটকের আইনমন্ত্রী বিসি পাতিল।