নভজ্যোৎ সিং সিধু বৃহস্পতিবার বলেছেন, লুধিয়ানা হাউস কোর্টের বিস্ফোরণ 'আশা ও ঐক্যের রাজনীতিকে ভয় ও বিভাজনের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করতে চাইছে।'
লুধিয়ানা আদালতের বিস্ফোরণ (Ludhiana Court Blast) নিয়ে এবার বিজেপিকে নিশানা করলেন কংগ্রেস (Congress) নেতা নভজ্যোৎ সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)। তিনি বলেন ভোটমুখী পঞ্জাবে বিভাজন তৈরি করতে ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে এই বিস্ফোরণের ঘটনা। নাম না করলেও তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গের কথাও টেনে আনেন। পাশাপাশি এই হামলার ঘটনাকে তিনি কাপুরোশিত বলেও বর্ণনা করেছেন।
নভজ্যোৎ সিং সিধু বৃহস্পতিবার বলেছেন, লুধিয়ানা হাউস কোর্টের বিস্ফোরণ 'আশা ও ঐক্যের রাজনীতিকে ভয় ও বিভাজনের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করতে চাইছে।' বিস্ফোরণে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি এই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন এজাতীয় যুদ্ধে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। রাজার গায়ে আঁচ পর্যন্ত লাগে না।
সিধু বলেন ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি ও মেরুকরণের জন্য নিরাপরাধ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। কিন্তু পঞ্জাবের বাসিন্দাদের পরাস্ত করা ও বিভাজন করা যে সম্ভব নয় তাও তিনি মনে করিয়ে দেন। কিনি বলেন যারা বিভাজন করতে চাইছে তারাই পরাস্ত হবে। তিনি আরও বলেন ভয় ছড়ানোর এই চেষ্টা যথেষ্ট দুর্ভাগ্যজনক। পশ্চিমবঙ্গ ভোট সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন বিধানসভা নির্বাচনের এক বা দুমাস আগে কেন এমন ঘটনা ঘটবে।
কংগ্রেস নেতা আরও বলেন গত চার বছর ধরে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু নির্বাচনের দুই এক মাস আগে এজাতীয় ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। এজাতীয় সস্তা রাজনীতির তিনি নিন্দা করেন বলেও জানিয়েছেন। পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান আরও বলেন যারা এজাতীয় ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের উপযুক্ত জবাব পঞ্জাবের মানুষই দেবেন। কারণ লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এই রাজ্যের মানুষের দখলে।
অন্যদিকে পঞ্জাবের লুধিয়ানা আদালত বিস্ফোরণকাণ্ডে ইতিমধ্যেই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গোটা বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহও ব্রিফ করেছেন। ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় দুঅ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন চার জন।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ যে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে তাতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণটি হয়েছিল একটি দুতলার শৌচাগারে। সেখানে এক ব্যক্তি বোমাটি একত্রিত করার চেষ্টা করছিল। সেই সময়ই সেটি ফেটে যায়। স্থানীয় পুলিশ সূত্রের খরব দুতলার এই শৌচাগারের পাশেই রয়েছে রেকর্ড রুম। তাই রেকর্ড রুমে হামলার পরিকল্পনা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পরই পঞ্জাব জুড়ে হাইঅ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পাব্লিক প্লেসের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা বা এনআইএ দুই সদস্যের একটি দল লুধিয়ানা বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করছে। ন্যাশানাল বোমা ডেটা সেন্টারের একটি দলও ঘটনাস্থলে গেছে। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখবে ন্যাশানাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজিএর একটি দল।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি। তিনি বলেছেন দোষীদের কোনওভাবেই রেহাই দেওয়া যাবে না। পঞ্জাব নির্বাচনের আগে এজাতীয় বিস্ফোরণ নিয়ে সরকারও সতর্ক ররয়েছে। উপমুখ্যমব্ত্রী সুখজিন্দর সিং রণধাওয়া বলেছেন এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনিও ঘটনাস্থন পরিদর্শন করেছেন।