বৃহস্পতিবার দেশের ওমিক্রণ (Omicron) সংক্রমণের ঘটনা ৩০০ ছাপিয়ে গেল। তারপরই রাজ্যগুলিকে ফের কোভিড-১৯ (COVID-19) চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিকে সক্রিয় করার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলল কেন্দ্র।
ডিসেম্বরের ২ তারিখ ভারতের প্রথম ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছিল। তারপর মাত্র তিন সপ্তাহ কেটেছে। বৃহস্পতিবার দেশের ওমিক্রণ সংক্রমণের ঘটনা ৩০০ ছাপিয়ে গিয়েছে। এর থেকেই বোঝায় যাচ্ছে, ঠিক কতটা দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনার এই ভেরিয়েন্ট। তারমধ্যে, আবার এই ৩০০ জনের মধ্যে অনেকেরই আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কোনও যোগই নেই। কাজেই স্থানীয় স্তরেও এই ভেরিয়েন্ট ছড়াতে শুরু করেছে। এই অবস্থায়, এদিন ফের রাজ্যে রাজ্যে কোভিড-১৯ মহামারি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশ পাঠালো কেন্দ্র। করোনা মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের (Covid Second Wave) উচ্ছ্বাস কমে যাওযার পর যে কোভিড-১৯ (COVID-19) চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিকে ফের সক্রিয় করার জন্য রাজ্যগুলিকে প্রস্তুত হতে বলেছে কেন্দ্র। প্রয়োজনে রাজ্যগুলিকে কঠোর বিধিনিষেধ এবং রাতের কারফিউ (Night Curfew) আরোপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ (Rajesh Bhushan) জানিয়েছেন, এখন বহু রাজ্যেই বেশ কিছু কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। তাই হঠাৎ করে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঘটনা বাড়লে, ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স পর্যাপ্ত পরিমাণে নাও মিলতে পারে। ক্রমবর্ধমান ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণের কারণে, এই কেন্দ্রগুলিকে ফের কার্যকর করার জন্য রাজ্যগুলিকে একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখতে হবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও (PM Narendra Modi) নতুন করোনা রূপান্তরের বিষয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক করেন। এর কয়েক ঘন্টা আগেই রাজেশ ভূষণ, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে ওমিক্রন পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন।আগেই কেন্দ্র জানিয়েছিল সার্স-কোভ-২'এর (SARS-CoV-2) ডেল্টা রূপান্তরের (Delta Variant) থেকে ওমিক্রনের তিনগুণ বেশি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে। এই কারণে সকলকে সতর্ক থাকতেই হবে। এই নতুন রূপান্তর এখন ইউরোপে সুনামির গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। বহু দেশে দেড় থেকে তিন দিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্য়া দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। যে দেশগুলির জনসংখ্যার অধিকাংশই ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ পেয়েছে, সেই দেশগুলিও রেহাই পাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য সচিব বলেছেন, রাজ্যগুলিকে কোনও এলাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং স্থানীয় কোভিড পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে ১০ শতাংশ ইতিবাচকতা কিংবা ৪০ শতাংশ অক্সিজেন প্রয়োজনীয়তার সীমানায় পৌঁছানোর আগেই নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। যে কোনও বিধিনিষেধ অবশ্যই ন্যূনতম ১৪ দিনের জন্য বলবৎ করতে হবে। নতুন কোভিড-১৯ মহামারির তরঙ্গের হুমকির মোকাবিলায় একটি পাঁচ-দফা কৌশল তৈরি করে রাজেশ ভূষণ, আসন্ন ক্রিসমাস এবং নববর্ষ উদযাপনের আগে রাজ্যগুলিকে নাইট কারফিউ আরোপ এবং বৃহৎ জমায়েতের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে রাজ্যগুলিকে কোভিড পজিটিভ মামলার নতুন ক্লাস্টারগুলির ক্ষেত্রে 'কন্টেনমেন্ট জোন' এবং 'বাফার জোন' চিহ্নিত করা এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা নির্দেশ দিয়েছেন।