আধ্যাত্মিক রসে ডুবে হিংস্র বুনো ভালুক, রোজ সীতারামের ভজন শোনে লালা-লালি-চুন্নু-মুন্নু

ভালুক হিংস্র প্রাণী।

কিন্তু মধ্যপ্রদেশের এক জঙ্গলে এই হিংস্র প্রাণীই এখন মজে ভজনে।

রোজ বন থেকে এক সাধুর ভজন শুনতে আসে এক ভালুক দম্পতি।

সঙ্গে আসে তাদের ছানাপোনারাও।

 

 

amartya lahiri | Published : Feb 15, 2020 6:00 AM IST

ভালুক-কে সকলে হিংস্র প্রাণী হিসেবেই চেনে। কিন্তু যদি বলা হয় এক ভালুক দম্পত্তি আধ্য়াত্মিকতায় ডুবে রয়েছে। রোজ তাদের ছানাকে নিয়ে ভজন শুনতে আসে, তাহলে মনে হতেই পারে গল্পের গরু গাছে চড়ছে। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের এক জঙ্গলে এই অবিশ্বাস্য ঘটনাই প্রতিদিন দেখা যায়। শাহডোল জেলায় রোজ সীতারাম নামে এক সাধুর ভজন শুনতে বন থেকে বেরিয়ে আসে এক ভালুক দম্পতি।

ওই জেলার রাজমদা বনাঞ্চলে শোন নদীর তীরে একটি কুঁড়ে ঘর তৈরি করে একাই থাকেন সীতারাম। ৬৫ বছরের এই সাধু, রোজ পূজা করে উঠে বীণা বাজিয়ে ভজন গান। সেই সময় পাশের জৈতপুর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে ওই বুনো ভালুক পরিবার। সীতারামের কুঁড়ে ঘরের সামনে এসে তাঁর ভজন শোনে। এমনকী তাদের চোখ বন্ধ করে রাীতিমতো আধ্যাত্মিক সুখে ডুবে যেতে দেখা যায়। ভজনের শেষে তাদের প্রসাদ দেন সীতরাম। সাগ্রহে তা গ্রহণ করে ফের জঙ্গলে ফিরে যায় ওই ভালুকরা।

২০০৩ সালে জেলা সদর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের ঠিক পাশে এই নির্জন স্থানে কুঁড়েঘরটি নির্মাণ করেছিলেন সীতারাম। তারপর থেকে সেখানেই থেকে গিয়েছেন। পুজো-আচ্চা নিয়েই থাকেন। তাঁর তপস্যার মাধ্যমই হল ভজন গান। তিনি জানিয়েছেন বালুকদের আগমন ঘটেছিল প্রায় আট বছর আগে। এক সকালে তিনি যখন চোখ বুজে ভজন গাইছিলেন তখন চারপাশে কারও উপস্থিতি অনুভব করেছিলেন।

চোখ খুলতেই বিস্ময়ে থ হয়ে যান তিনি। দেখেন ওই ভালুক দম্পতি একেবারে চুপ করে গভীর মনোযোগ দিয়ে তাঁর গান শুনছে। প্রথমে ভয় পেলেও তাদের দেখে তিনি বোঝেন, ভালুকরা তাঁকে আক্রমণ করতে আসেনি। এরপর ফের সাহস করে ভজন গাইতে শুরু করেন। তারপর গান শেষ হলে প্রসাদ দিয়েছিলেন। এখন তারা শুধু সকালে ভজনের সময়ই নয়, প্রায়শই সীতারামের ঝুপড়ির বাইরে বসে থাকে।

এই বন্য প্রাণীদের সঙ্গে সীতারাম-এর সম্পর্ক এতটা গভীর হয়ে উঠেছে যে তিনি ওই ভালুকদের নাম-ও দিয়েছেন। পুরুষ ভালুকটির নাম লালা এবং তার সঙ্গিনীর নাম লাল্লি আর তাদের বাচ্চারা হল চুন্নু ও মুন্নু। এমনকী বন্য পশুগুলো-ও সীতারাম তাদের নাম ধরে ডাকলে বুঝতে পারে। এই বন্য বন্ধুদের নিয়ে সীতারাম দারুণ গর্বিত। অনেকের মনে হতে পারে সাধুবাবা ক্লপ কাহিনি বলছেন। প্রথমে এমনটা ভেবেছিলেন জৈতপুর ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার সেলিম খান-ও। কিন্তু, তিনি জানিয়েছেন, বহুবার তিনি নিজে ওই বন্য প্রাণীগুলিকে আধ্যাত্মিক রসে ডুবে সীতারামের ভজন শুনতে দেখেছেন। তাঁর মতে, 'এ এক বিস্ময়কর দৃশ্য'।

Share this article
click me!