তেলেঙ্গনায় বাংলার শ্রমিকদের মৃত্যু রহস্যের কিনারা, প্রেমিকার হত্যা চাপা দিতে পরপর ৯টি খুন

  • ১টি খুন চাপা দিতে আরও ৯টি খুন করল যুবক
  • গত মার্চ মাসে নিজের বান্ধবীকে খুন করে সে
  • সেই খুনকে ধামাচাপা দিতেই আরও ৯টি খুন
  • প্রমাণ লোপাট করতে দেহগুলি কুয়োর ভিতর ফেলে দেয়

Asianet News Bangla | Published : May 26, 2020 11:22 AM IST / Updated: May 26 2020, 04:58 PM IST

গত সপ্তাহে তেলেঙ্গনার ওয়ারাঙ্গেলে ঘটা একটি ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।  গিসুগোন্ডা মণ্ডল এলাকার গোরেরকুন্টা গ্রামের একটি কুয়া থেকে নয়টি দেশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এদের মধ্যে এক পরিবারের ছয় সদস্য ছিলেন। যারা আবার আদতে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। পরিবারের গৃহকর্তা মাকসুদ স্থানীয় একটি ব্যাগ কারখানায় কাজ করতেন। তাই লকডাউনের জেরে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক কষ্টি পরিবারটি আত্মহত্যা করেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে নেমে কারণ উঠে এল ভিন্ন। জানা গেল সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই বিহারের এক শ্রমিক খুন করেছিল আদতে বাংলার বাসিন্দা একই পরিবারের ওই ৬ সদস্যকে। তাঁদের সঙ্গেই গুম করা হয়েছিল বিহারের ২ জন এবং ত্রিপুরার একজন পরিযায়ী শ্রমিককে।

গত সপ্তাহেই ওয়ারাঙ্গেলের একটি কুঁয়ো থেকে ৯টি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রগস্যের িনারা করতে নেমে বিহারের বাসিন্দা সঞ্জয় কুমার নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ইতিমধ্যে খুনের কথা স্বীকার করেছে ওই চব্বিশের যুবকটি। প্রমাণ লোপাট করতে দেহগুলি সে কুয়োতে ফেলে দেয় বলে জানিয়েছে। 

পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে , গত মার্চে একটি খুনের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই তেলেঙ্গানায় এই গণহত্যার ঘটনা । জানা গিয়েছে, ৬ বছর আগে বিহার থেকে এসে ওয়ারঙ্গলের ওই ব্যাগ ফ্যাক্টারিতে কাজে যোগ দেয় সঞ্জয়। সেখানেই মাকসুদের পরিবারের এক বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় সঞ্জয়ের। এমনকি রফিকার সঙ্গে একসঙ্গেই থাকতেন দুজনে। কিন্তু চলতি বছর মার্চ মাসের ৬ তারিখ থেকে রফিকা নিখোঁজ হয়ে যান। অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্ধ্র যাওয়ার পথে রফিকাকে ট্রেন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় সঞ্জয়। আর সেই খুনকে ধামাচাপা দিতেই পরপর আরও ৯টি খুন করল সঞ্জয়।

ওয়াড়াঙ্গাল পুলিশ কমিশনার ভি রবীন্দর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত ৬ মার্চ প্রেমিকাকে খুন করে সঞ্জয়। খুনের ঘটনা কোনওভাবে জানতে পেরে গিয়েছিলেন মাকসুদের স্ত্রী । সঞ্জয় জেরার জানিয়েছে, ওই মহিলা বার বার খুনের ঘটনা পুলিশকে জানিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিতেন । আর এতেই দিন দিন তার ক্ষোভ জমতে শুরু করে। তাররেই ঠাণ্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা করে সে । 

 

 

গত বুধবার মাকসুদের নাতির জন্মদিন পালন করছিল পরিবার। সেখানেই উপস্থিত হয় সঞ্জয়। সুযোগ বুঝে ডালের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় সে। প্রথমে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে , পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে একে একে ন'জনের দেহ ছুড়ে ফেলা হয় কুয়োয় ।

মাকসুদ, তাঁর স্ত্রী নিশা, তাদের কন্যা বুশরা খাতুন এবং তিন বছরের নাতির দেহ গত বৃহস্পতিবারই কুঁয়ো থেকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও, মাকসুদের আরও ২ সন্তান শাহবাজ আলম, সোহেল আলম এবং ত্রিপুরার বাসিন্দা শাকিল, বিহারের বাসিন্দা শ্যাম ও শ্রীরামের দেহও  শুক্রবার ওই একই কুঁয়ো থেকে উদ্ধার করা হয়। এদিকে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ জানতে পারে নিশার সঙ্গে শেষবার সঞ্জয় কুমারকেই দেখা গিয়েছিল। এরপরেই পুলিশি জেরায় নিজের দোশ কবুল করে সঞ্জয়।

 


 

Share this article
click me!