বিক্রি, গণধর্ষণ, পুলিশও উদাসীন - গায়ে আগুন বিধবার! মধ্যযুগীয় বর্বরতা যোগী-রাজ্যে

  • ১০০০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি হলেন এ বিধবা মহিলা
  • হতে হল লাগাতার গণধর্ষণের শিকার
  • অভিযোগ পেয়েও মুখ ফিরিযে পুলিশ
  • বাঁচতে গায়ে আগুন, এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন

amartya lahiri | Published : May 13, 2019 10:09 AM IST

নরেন্দ্র মোদী স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ডিজিটাল ভারতে। আর সেখানেই এক ২৭-২৮ বছর বয়সী বিধবা মহিলাকে বিক্রি করে দেওয়া হল ১০০০০ টাকার বিনিময়ে। তারপর সেই 'ক্রেতা' ও তার বন্ধুদের হাতে সেই মহিলাকে হতে হল গণধর্ষণের শিকার। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে মিলল শুধুই একরাশ উদাসীনতা। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষে গায়ে আগুন গিয়ে মুক্তি চাইলেন তিনি। আপাতত হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আরও একবার একুশ শতকের ভারতে মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি দেখা গেল। ঘটনাস্থল বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের মিরাট।

জানা গিয়েছে ওই হতভাগ্য মহিলা পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের হাপুর জেলার বাসিন্দা। অভিযোগ, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরই তাঁকে মাত্র ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয় তাঁরই বাবা ও পিসি। জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তির অনেকের কাছে ঋণ ছিল। তা মেটাবার কাজে বিধবা মহিলাকে ব্যবহার করা শুরু হয়। বিনা পারিশ্রমিকে ঋণদাতাদের বাড়িতে গৃহস্থালীর কাজ করার জন্য পাঠানো হত তাঁকে। আর সেই ঘরের কাজের আড়ালে চলত তাঁর উপর যৌন অত্যাচার, গণধর্ষণ।

এই ক্ষেত্রে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর কথা ছিল পুলিশ ও প্রশাসনের। কিন্তু ওই মহিলা জানিয়েছেন বার বার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সহায়তা পাননি। অভিযোগ অপরাধীদের কাছ থেকে পাওয়া ঘুষের বিনিময়ে এই বিষয়ে একেবারে উদাসীন থেকেছে হাপুর পুলিশ। আর এরপরই গত ২৮ এপ্রিল এই অসহায় অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে তিনি আত্মহননের চেষ্টা করেন। দেহের অনেকটা পুড়ে যায় আগুনে। আপাতত দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

সোশঅয়াল মিডিয়ায় ওই মহিলার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিও-তে তিনি স্পষ্ট ভাষায় পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ঢুটো হয়ে বসে থাকার অভিযোগ জানিয়েছেন। এরপরই এই বর্বরোচিত কাণ্ড জানাজানি হয়। ঘটনাটি নিয়ে পদক্ষেপ করা শুরু করেছে দিল্লি মহিলা কমিশন। ইতিমধ্য়েই দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল বিষয়টি জানিয়ে ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তদন্তের দাবি করে উত্তরপ্রদেশর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি পাঠিয়েছেন।

নড়ে চড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশও। হাপুরের বাবুগড় থানার এসএইচও রাদজেশ কুমার ভারতী জানিয়েছেন বেশ কেয়কজন পুলিশকর্মী-সহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে এবং এই বিষয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য় বলছে পুলিশ সঠিক সময়ে তার কাজ করলে ঘটনাটি এতদূর গড়াতো না। ওই মহিলাকে চরম সিদ্ধান্ত নিতে হত না।

Share this article
click me!