কাজের বাজারে কার দর বেশি বোজাচ্ছে মুনলাইটিং, বাণিজ্যের আলোচনায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য রাজীব চন্দ্রশেখরের

প্রাথমিক ভাবে কোন  কোম্পানির সাথে যুক্ত কেউ যদি ওই  কোম্পানির নিয়োগকর্তাদের অনুমোদন ছাড়াই যদি তিনি অন্য কোনো কোম্পানিতে  যোগ দেন সেটাকে বলে মুনলাইটিং।  এবার এই আইনবিরুদ্ধ  বিষয়টি নিয়েই প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর 

Bhaswati Mukherjee | Published : Sep 25, 2022 9:14 AM IST

সম্প্রতি মুনলাইটিং-এর জন্য ৩০০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রো। এরপর থেকেই এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইনফোসিস-ও কর্মীদেরকে মুনলাইটিং নিয়ে কড়া সতর্কতা দিয়েছে। গুগল-ও মুনলাইটিং সমস্যায় রয়েছে বলে খবর। বলতে গেলে মুনলাইটিং এই মুহূর্তে বিতর্কের এক্কেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এমন এক পরিস্থিতি নিয়ে মুনলাইটিং নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য পেশ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। 

পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ফোরাম অফ ইন্ডিয়ার নবম সংস্করণের বার্ষিক সভার ফাঁকে ইকোনমিক টাইমসকে একটি  বিবৃতি দেন রাজীব। সেখানে তিনি বলেন,'মুনলাইটিং নিয়ে যে শোরগোল হচ্ছে বর্তমান সময়ে  সেটি প্রধানত সমাজের  দুটো গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরছে। প্রথমটি হলো টেকনোলজি যেভাবে সমাজকে গ্রাস করছে তাতে ভবিষ্যতে  শেয়ার বাজারে টেকনোলোজিক্যাল কোম্পানি বা আইটি সেক্টরগুলির রমরমা আরও বাড়বে।  আর দ্বিতীয়টি হলো বাজারে টেকনোলোজিক্যাল কোম্পানিগুলির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাস্তানুপাতিক হারে দেখা যাচ্ছে প্রতিভার ঘাটতি।'

কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর আরও বলেন যে, মুনলাইটিং আসলে বুঝিয়ে দিয়েছে কার সময় এসেছে। সন্দেহ নেই প্রযুক্তিবিদরা তাঁদের বুদ্ধি এবং দক্ষতাকে একাধিক স্থানে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে রাজীব আরও বলেন, সময়ের এই বদলে যাওয়ার পরিস্থিতিকে সকলকে বুঝতে হবে। বুঝতে হবে যে কাদের চাহিদাটা এই সময়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মুনলাইটিং-কে জোর করে বন্ধ করার চেষ্টা করা উচিত বলেই মনে করছেন রাজীব। তাঁর মতে, একজন কর্মী তাঁর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একাধিক জিনসকে পেতে চাইছে। এটাকে দমনপীড়নের মাধ্যমে বন্ধ করার চেষ্টা করাটা ঠিক নয় বলেই মনে করছেন তিনি। কারণ তিনি অত্যন্ত গভীরভাবেই অনুভব করছেন যে এটা দক্ষ কর্মীদের বাজারে এমন এক ট্রেন্ড যা প্রমাণ করছে কার চাহিদা বেশি বুঝে নাও। তবে, মুনলাইটিং-র কনসেপ্টে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেও রাজীব আবার জানিয়েছেন, কর্মীদেরও মাথায় রাখতে হবে সংস্থার নিয়োগ কর্তার সঙ্গে হওয়া চুক্তি। যদি মুনলাইটিং তাঁদের নিয়োগের নির্দেশিকাকে লঙ্ঘন করে তাহলে মুনলাইটিং নৈতিকভাবে করা উচিত নয়। 

মুনলাইটিং বিষয়টি কি ? 
মুনলাইটিং হল যে কোনও মানুষ প্রাথমিক ভাবে যে পেশার  সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সেই  সংস্থার নিয়োগকর্তাদের অনুমোদন ছাড়াই যদি তিনি অন্য কোনও কোম্পানির কাজ করতে থাকলেন বা তাঁর জ্ঞান-কে শেয়ার করলেন যাকে নলেজ শেয়ারিং-ও বলা হয়। সাধারণত অফিস আওয়ার্সের পরে রাতে এই কাজগুলি করলে তাকে মুনলাইটিং বলা হয়। রাতে যেহেতু অন্য সংস্থার জন্য কাজ করছেন সেই কারণে চাঁদের ইংরাজি নামকে রেফার করে মুনলাইটিং পরিভাষা দেওয়া হয়েছে একে। 

ভারতে একই সঙ্গে দুটো স্থায়ী পাকা কাজ করা যায় না। এটা আইন বিরুদ্ধ। যদিও, কিছু তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থাকে এর বাইরে রাখা হয়েছে। যেমন সুইগি তাদের ডেলভারি বয়দের ডিউটি-তে থাকাকালীন বাইরের অন্য সংস্থার কাজ করার অনুমতি দেয়। যদিও, এগুলো ব্যতিক্রম।  

Share this article
click me!