নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি নিয়ে গণভোটের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জনগণের মতামত নিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা মানবাধিকার সংগঠনের নজরদারিতে নির্বাচনের কথা বলেছিলেন মমতা। এবার সুযোগ পেয়ে তৃণমূল নেত্রীর সেই কথাকেই হাতিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী। মমতাকে মোদীর পাল্টা প্রশ্ন, তৃতীয় পক্ষ দিয়ে ভোট করাতে চেয়ে আপনি কাদের পক্ষ নিচ্ছেন তা সবাই দেখতে পাচ্ছে।
রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানের জনসভা থেকে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করেন মোদী। তিনি বলেন, মমতা তো সংসদে নিজেই চাইতেন অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে। এখন উনি কলকাতা থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন। হঠাৎ এই বদল কেন দিদি? এদিন রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও জাত পাত দেখে প্রকল্প করেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের সুবিধা হিন্দু, মুসলিম, শিখ সবাই পাচ্ছেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মানুষকে ভুল বোঝাতে চেষ্টা করছে।
কদিন আগেই রাজ্য়ে সিএএ ও এনআরসি বিরোধী সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি কোনও ভাবেই বাংলায় নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি হতে দেবেন না। বিজেপি ধর্মের রাজনীতি করছে বলেই অভিযোগ করেছেন তৃণমূলনেত্রী। এদিন যার উত্তরে মুখ খোলেন মোদী। বিজেপির পোস্টার বয় বলেন, মমতা এখন কলকাতা থেকে সরাসরি রাষ্ট্রপুঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন। উনি তো নিজেই অনুপ্রবেশকারীদের হটাতে সংসদে গলা ফাটাতেন। শরণার্থীদের নাগরিকত্বের জন্য আওয়াজ তুলতেন। হঠাৎ এত বদল কেন দিদি? আপনি কাদের সমর্থন করছেন সেটা সবাই বুঝতে পারছে।
রাজ্য় রাজনৈতিক মহল বলছে, সিএএ ও এনআরসি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও মানবাধিকার কমিশনকে দিয়ে গণভোট করানোর কথা বলে বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন মমতা। ভুল যে তিনি করেছেন তা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রথমে গণভোটের কথা বললেও তা থেকে রাতারাতি সরে এসেছেন মমতা। তপসিয়ায় গণভোট সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে মানুষের মতামত নেওয়ার কথা বলেছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি তাই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কথাও বলেছি। গণভোটের ইংরেজি প্রতিশব্দটা কিন্তু বলিনি। কেবল জনমত নেওয়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি। আমি ভাত আর আমি ভাত খাই এক বিষয় নয়।