'ব্রিজ দুর্ঘটনা কি গুজরাটের মানুষকে চেতনা দিল?', প্রশ্ন করলেন তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়

হুগলির খানাকুল ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এসে রাজীব গুজরাটের ব্রিজ দুর্ঘটনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর তীব্র সমালোচনা করেন। মোদীর পুরনো বক্তব্য তুলে ধরে বিজেপির সমালোচনা করেন তিনি।

 

Saborni Mitra | Published : Oct 31, 2022 7:08 PM IST / Updated: Nov 01 2022, 12:41 AM IST

মোরবি সেতু দুর্ঘটনার জন্য বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুললেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি ব্রিজটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। গুজরাটি নববর্ষের জন্যই এই উদ্বোধন করা হয়েছিল। তাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও তিনি দাবি করেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, মানুষের নিরাপত্তা জরুরি ছিল। কিন্তু সেতুর ফিটসার্টিফিকেট না দিয়েই ব্রিজটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। আর তাতেই এই দুর্ঘটনা।

হুগলির খানাকুল ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এসে রাজীব গুজরাটের ব্রিজ দুর্ঘটনা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি ২০১৬ সালে এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিবেকানন্দ ফ্লাইওভার দুর্ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর মন্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন ২০১৬ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই রাজ্যের সেতু দুর্ঘটনা নিয়ে মোদী বলেছিলেন, 'ঈশ্বর বাংলার মানুষকে চেতনা দিল যাতে তৃণমূলের হাত থেকে এই রাজ্য নিস্তার পায়।' সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজীব পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, 'তাহলে কি ঈশ্বর গুটরাটের মানুষকে এবার চেতনা দিল, যাতে সেখানের মানুষ বিজেপি থেকে পরিত্রাণ পায়?' যাইহোক পাশাপাশি তিনি বলেন যে কোনও দুর্ঘটনাই দুঃখের। মৃত্যুর ক্ষতি কখনই পুরণ হয় না।

অনেকটা একই সুরে কথা বলেছেন কংগ্রেস নেতা দ্বিগ্বিজয় সিং। তিনি বলেন, মোদীর পুরনো ভিডিও শেয়ার করে জানতে চেয়েছেন মাচ্ছু নদীর ওপর সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা কি ঈশ্বারের কাজ না প্রতারণার কাজ। গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। মোদীর পুরনো মন্তব্য এদিন সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। তাই নিয়েই এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিশানা করেন তাঁকে। যিনি একটা সময় মোদীর অনুপ্রেরণায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য দল বদল করে তৃণমূলেই ফিরে আসেন।

রবিবার গুজরাটের মোরবিতে মাচ্ছু নদীর ওপর শতাব্দী প্রাচীন ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ায় কমপক্ষে ১৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ আমলের এই সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ ছিল। মেরামতি আর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। গত ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষ উপলক্ষ্যে সেতুটি জনতার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেতুটির দায়িত্বে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। অভিযোগ নির্ধারিত সময়ের আগেই সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। মোরবি মিউনিসিপ্যাল বড ও অজন্তা ম্যানুফ্যাকটারিং প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সেতুটি কমপক্ষে ৮-১২ মাস বন্ধ রাখার কথা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। তেমনই অভিযোগ করছে মরবি পৌরসভা।

রবিবার সন্ধ্যে ৬টা ৩০ মিনিটে সেতুটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। সেই সময় সেতুর ওপর প্রায় ৫০০ লোক ছিল। অত্যাতাধিক ভিড়ের চাপ সেতুটি সহ্য করতে পারেনি। তাতেই ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ঝুলন্ত সেতুর তার ছিঁড়ে যায়। তারপরই সেতুটি ভেঙে পড়ে। সেই সময় সেতুর ওপর প্রচুর শিশু ও মহিলা ছিল। বিকট শব্দ করেই সেতুটি ভেঙে পড়ে জলের ওপর। অনেকেই মানুষই নদীতে ডুবে যায়। প্রথম দফায় সাত আট জনকে তিনি উদ্ধার করেছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন পর্যটক হিসেবেই তিনি সেতু দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পর মানুষের আর্তনাদ দেখে তিনি জলে ঝাঁপ দিয়ে কয়েক জনকে উদ্ধার করেন। অন্য একজন জানিয়েছেন সেতুর ওপর প্রবল ভিড় ছিল। অনেকে আবার সেতুর কেবল ধরে টানাটানি করছিল। তাতেই তারগুলি ছিঁড়ে যায়। গুজরাটের পঞ্চায়েত মন্ত্রী ব্রিদেশ মের্জা বলেছেন, উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। আহতদের হাতপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

 

Share this article
click me!