বিএসএনএল, এমটিএনএল-এর পরিষেবার উপর আস্থা রাখতে পারছেন না দেশের সাংসদরাই। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বদলে বেসরকারি টেলিকম সংস্থার পরিষেবার পক্ষেই সওয়াল করলেন তাঁরা। এই প্রস্তাব নিয়ে অবশ্য আপত্তি জানিয়েছেন বেশ কিছু বিরোধী সাংসদ।
বর্তমানে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল এবং এমটিএনএল। এরই মধ্যেই দুই সংস্থার পরিষেবা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন, সরকারি দুই সংস্থার পরিষেবা এতটাই খারাপ যে তা আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিএসএনএল এবং এমটিএনএল- এর বিরুদ্ধে কল ড্রপ, স্লো ব্রডব্যান্ড স্পিডের মতো একাধিক অভিযোগ তুলেছেন বহু সাংসদ। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতেই বিজেপি-র ওম মাথুরের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সভার হাউজ কমিটি সুপারিশ করেছে, বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-এর বদলে সাংসদদের অন্য সংযোগ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।
দেশের সব সাংসদই তিনটি ফোন কানেকশনের সুবিধে পান। তার মধ্যে একটি ব্রডব্যান্ডের জন্য ব্যবহার করা হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বছরে পঞ্চাশ হাজার ফ্রি লোকাল কল করতে পারেন সাংসদরা। এর পাশাপাশি ব্রডব্যান্ডের বিল বাবদ মাসে দেড় হাজার টাকার খরচও বহন করে সরকার। সবমিলিয়ে বছরে ফোন এবং ব্রডব্যান্ড বিল বাবদ বছরে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ভর্তুকি পান একজন সাংসদ।
তবে অধিকাংশ সাংসদ বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-এর পরিষেবা ছাড়তে চাইলেও হাউজ কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসের বি কে হরিপ্রসাদ, মহম্মদ আলি খান, সমাজবাদী পার্টির জাভেদ আলি খানরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাউজ কমিটির এক সদস্য বলেন, 'আমরা সাংসদরাই যদি সরকারি সংস্থার পাশে না দাঁড়াই, তাহলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আমরা কীভাবে করব?' হাউজ কমিটির মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আপাতত এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-এর পুনরজ্জীবনের লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা করেছে। তার মধ্যে অন্যতম বিএসএনএল-এর জন্য ৭৪,০০০ কোটি টাকার পুনরজ্জীবন প্রকল্র। যদিও এই পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আর তাই বিষয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত দুই টেলিকম সংস্থার পুনরজ্জীবনের জন্য গঠিত বিশেষ প্যানেলের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।