তখন মুখোমুখি দুই মা। এক মা নির্যাতিতা নির্ভয়ার মা, আরেকজন মঙ্গলবারই ফাঁসির পরোয়ানা পাওয়া মুকেশ সিং-এর মা। মুকেশের মা কেঁদে লুটিয়ে পড়লেন নির্ভয়ার মায়ের পায়ে। প্রাণ ভিক্ষা চাইলেন ছেলের। কী বললেন সাত বছর ধরে মেয়ের ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করা নির্ভয়ার মা আশাদেবী?
মুকেশের মা জানেন তাঁর ছেলে ভয়ানক অপরাধ করেছে। মহিলা হিসেবে তিনি অনুভব করেছেন কতটা পাশবিক অত্য়াচার চালিয়েছে তাঁর ছেলে। কিন্তু সেই সঙ্গে তিনি একজন মা তো। তাই মনে প্রাণে চেয়েছিলেন এই জঘন্য় অপরাধের পরও যাতে তাঁর ছেলেকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাই শেষ রক্ষা করতে সোমবার আদালতের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকার সময়ে মুকেশ সিংয়ের মা নির্ভয়ার মায়ের সামনে আঁচল পেতে ধরেছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে নির্ভয়ার মাকে বলেন, 'আমি আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চাইছি। আমার ঝুলিতে আমার ছেলের প্রাণ দিয়ে দিন।'
আরও পড়ুন - নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর ফাঁসিতেই ভাঙবে দাদুর রেকর্ড, গর্বিত পবন জল্লাদ
আরও পড়ুন - মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা জারির পরও থামছে না বিতর্ক, কাঠগড়ায় স্বয়ং বিচার ব্যবস্থা
আরও পড়ুন - ফাঁসি ২২ জানুয়ারি, নির্ভয়ার মা বললেন সেদিন তাঁর 'বড়দিন'
আরও পড়ুন - সাত বছর অপেক্ষার পর মেয়ে পেল ন্যায়বিচার, কী বলছেন তাঁর মা-বাবা
আরেক মায়ের সেই কাতর আর্তি নির্ভয়ার মা আশা দেবীরও মন গলিয়ে দেয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনিও। কিন্তু মেয়ের জন্য সাত বছর বুকে পাথর বেঁধে লড়েছেন তিনি। সেই দৃঢ়তায় কোনও ফাটল ধরেনি। সজল চোখেই তিনি জানান, 'আমারও একটা মেয়ে ছিল, কীভাবে ভুলে যাব তার সঙ্গে কী হয়েছিল। সাত বছর ধরে এই দিনটার জন্য আমি অপেক্ষা করে আছি।'
মঙ্গলবার আদালতে নির্ভয়ার বাবা-মা দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করার জন্য আবেদনের দায়ের করার পরই এই ঘটনা ঘটে। পুরোটাই ঘটে বিচারকের সামনে। তিনি অবশ্য এতে বিচলিত হননি। আদালতের কক্ষে নীরবতার ডাক দেন। তারপর ফের মামলার শুনানির কাজ চালিয়ে যান।