২০১৮ সালে রাজস্থানে বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর হাইকমান্ডের ইচ্ছায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন অশোক গেহলট। উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তরুণ তুর্কী শচীন পাইলটকে। কিন্তু রাজ্য চালাতে হলেও সেই মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর মধ্যেই বাক্যালাপ ছিল না। সেই তথ্য নিজেই ফাঁস করলেন অশোক গেহলট। গেহলটের মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়েই আপত্তি শচীনের। যারজন্য উপমুখ্যমন্ত্রীত্ব থেকে দলের পদ, দুটোই হারিয়েছেন এই তরুণ নেতা। গেহলটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে ছুটেছেন আদালত পর্যন্তও। তবে একদা ডেপুটি শচীন পাইলট দলে ফিরে এলে তিনি সাদরে তাঁকে বরণ করে নেবেন বলেই জানাচ্ছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট।
রাজস্থানের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে শচীন পাইলটকে সরিয়ে দেওয়া হলেও তাঁকে দলে ফেরাতে অবশ্য আপত্তি নেই কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বেরও। অন্তত সেই রকম বার্তাই শচীনকে দিয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। সূত্রের খবর, শচীনকে তিনি জানিয়েছেন, এখনও সময় রয়েছে, ফিরে আসুন। পুরনো কথা কিছু মনে রাখা হবে না।
আরও পড়ুন: দৈনিক আক্রান্ত ফের ৩৫ হাজারের কাছাকাছি, দেশে মৃতের সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়াল
তবে শুধু চিদম্বরমই নন, এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সঙ্গেও কথা হয় শচীন পাইলটের। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তার পরেও অবশ্য বিজেপি ঘনিষ্ঠ দুই আইনজীবীকে নিয়ে শুক্রবার রাজস্থান হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পাইলট। কংগ্রেসের তরফে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের যে আবেদন জানানো হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা করেন শচীন অনুগামী ১৮ জন বিধায়কও।
সেই লড়াইয়ের প্রথম ধাপে অবশ্য অ্যাডভান্টেজ শচীনই। পাইলট ও ১৮ জন বিদ্রোহী বিধায়কের বিধানসভায় সদস্যমপ মঙ্গলবার পর্যন্ত খারিজ করা যাবে না। রাজস্থান হাইকোর্ট তাঁদের বিরুদ্ধে এই মুহুর্তে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এদিকে অডিও টেপ কাণ্ডে এবারং কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরেজওয়ালা ও গোবিন্দ সিং দোতসারার বিরুদ্ধে মামলা করল বিজেপি। শুক্রবার সকালেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি অডিও রেকর্ডিং-এর কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে যোগসাজশে রাজস্থান সরকার পেলে দেওয়ার চক্রান্তে এফআইআর দায়ের করার দাবি করা হয়েছিল। সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরেদওয়ালা অডিও রেকর্ডিং-এর লিখিত বয়াম পড়ে শোনান। যার প্রধান বিষয় ছিল বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সরকার ফেলে দেওয়ার পরামর্শের কথোপকথন। এরপরেই ফৌজদারি মামলা দায়ের হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের বিরুদ্ধে।
দিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রীর দাবি, অডিয়োর কণ্ঠস্বর তাঁর নয়। শেখাওয়াত বলেন, ‘আমি কাউকে টাকার টোপ দিইনি। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। অডিয়োতে যে গলা শোনার যাচ্ছে, তা আমার নয়।’’ এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুক্রবার ভানওয়ার এবং আরেক বিদ্রোহী বিধায়ক বিশ্ববেন্দ্র সিংহকে এদিন কংগ্রেস সাসপেন্ড করে। ভানওয়ারও বলেন, ‘‘আমারে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই অডিয়ো টেপের গলা আমার নয়। কেউ আমার গলা নকল করে এমন করেছে।’’
বিধায়ক কেনাবেচা মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় জৈন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করেছে রাজস্থান পুলিশ। কংগ্রেসের দাবি ওই ব্যক্তি বিজেপির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত। বিষয়টি নিয়ে এবার সুরেজওয়ালা ও রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি গোবিন্দ সিং দোতসারারকে আইনি নোটিস পাঠালেন বিজেপি নেতা লক্ষ্মীনাথ ভরদ্বাজ।