এবার অর্থনৈতিক মন্দার সরাসরি প্রভাব দেখা গেল কর্মক্ষেত্রে। 'সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি'-র প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য বলছে অক্টোবর মাসে ভারতের বেকারত্বের হার একলাফে ৮.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসের পর থেকে বেকারত্বের হার এই পর্যায়ে আর পৌঁছায়নি। এমনকি নোট বাতিলের সময়ও এতটা খারাপ অবস্থা হয়নি।
সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক মন্দাকে সামাল দিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অবশ্য প্রকাশ্যে এখনও বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি মানতে চাইছেন না। কখনও অঙ্ক কষে লাভ নেই, কখনও বলিউডি সিনেমার বক্সঅফিস রোজগার তুলে ধরে অর্থনীতির বেহাল দশাটা অস্বীকার করছেন তাঁরা। শুক্রবারের এই তথ্য সামনে আসার পর অর্থনীতিবিদরা বলছেন অর্থনৈতিক মন্দার কারণেই চাকরিক্ষেত্রে এই মন্দা দেখা দিয়েছে।
'সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি'-র এই তথ্যের পাশাপাশি 'সেন্টার ফর সাসটেইনেবল এমপ্লয়মেন্ট'-এর এক গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে ২০১১-১২ থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে ভারতে মোট কর্মসংস্থান উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তাদের তথ্য বলছে এই সময়কালে প্রায় নব্বই লক্ষ কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। গবেষণাপত্রটির লেখক সন্তোষ মেরহোত্রা ও যযাতি কে পারিদা দাবি করেছেন, ভারতীয় ইতিহাসে এই ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি।
অর্থনীতিবিদের মতে ভারতে বেকারত্বের এই স্রোত সবচেয়ে বেশি আঘাত করছে অসংগঠিত ক্ষেত্রকে। মরসুমি শ্রমিক থেকে শুরু করে দিন মজুর, খেটে খাওয়া মানুষরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর এর ফলে এক আশ্চর্য পাকচক্রে পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। বেকারত্বের ফলে মানুষের হাতে ক্রয়ক্ষমতা কমছে। তার ফলে ব্যপক হারে কমছে চাহিদা। আর চাহিদার এই তীব্র সংকোচনের ফলে গত কয়েক মাসে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে উৎপাদন। আবার এই কারণেই দিন মজুর বা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছেন।