মৃত ব্যক্তির বীর্য নিয়ে শ্বশুর-বউমার টানাটানি, অদ্ভূত মামলায় কী রায় দিল আদালত

পুত্রের মৃত্যুর পর তার বীর্যের অধিকার চেয়েছিলেন বাবা

কিন্তু, রাজি হয়নি তার পুত্রবধূ

বিষয়টি গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত

কী রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট

একমাত্র ছেলে মৃত। কিন্তু বংশধর চাই। তাই স্পার্ম ব্যাঙ্কে সংরক্ষিত মৃত পুত্রের বীর্য চাই তাঁর। কিন্তু বাধ সেধেছে পুত্রবধূ। এই নিয়ে ছেলের শুক্রাণুর অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন বাবা। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির বীর্যের উপর অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র তাঁর বিধবা স্ত্রীর, তাঁর বাবাকে কোনও অধিকার নেই।

Latest Videos

জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের মার্চে কলকাতা হাইকোর্টে এই আবেদন করেছিলেন মৃত ওই ব্যক্তির বাবা। জানিয়েছিলেন, দিল্লির এক হাসপাতালের স্পার্ম ব্যাঙ্কের সঙ্গে তাঁদের যে চুক্তি রয়েছে, তার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তাঁর মৃত পুত্রের শুক্রাণু নষ্ট করে ফেলা হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে তাঁর বংশ আর এগোবে না। তাই সেই শুক্রাণু বা বীর্যের অধিকার পাওয়ার জন্য তিনি তাঁর পুত্রবধূর কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, পুত্রবধূ তাদের সেই আবেদনে সাড়া দেননি শুধু নয়, আবেদনটি স্বীকারই করেননি। তাই আদালতের কাছে সেই অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন মৃত পুত্রের বাবা।  

এই বিষয়ে গত ১৯ জানুয়ারি তিন পৃষ্ঠার রায় দেন কলকাতা হাইকর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। তিনি জানান, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে শুধুমমাত্র পিতা-পুত্রের সম্পর্ক আছে বলেই আবেদনকারী তাঁর মৃত ছেলের শুক্রাণুর অধিকার পাবেন না। মৃত ব্যক্তি বিবাহিত ছিলেন বলে শুক্রাণু পাওয়ার মৌলিক অধিকার একমাত্র তাঁর স্ত্রীরই রয়েছে। উচ্চ আদালত আরও বলেছে, আবেদনকারী মৃত ব্যক্তির বাবা বলে, পুত্রের বংশধরদের উপর তাঁর অধিকার নেই। সেই হিসাবে, আবেদনটিকে 'অলীক ও অবাস্তব' বলা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তি আদতে কলকাতার বাসিন্দা হলেও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পড়াশোনা করেছিলেন। সেইসঙ্গে দিল্লির এক হাসপাতালে তাঁর থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসাও চলছিল। সেইসময়ই তাঁর বাবা-মা স্পার্ম ব্যাঙ্কে তাঁর শুক্রাণু সংরক্ষণ করেছিলেন। এরপর অবশ্য চিকিৎসকদের সম্মতি নিয়ে ২০১৫ সালের অক্টোবরে দিল্লির এক বাসিন্দাকে বহিয়ে করেছিলেন তিনি। কয়েকমাস পর, পশ্চিম মেদিনীপুরের এক কলেজে অধ্যাপকের চাকরি পান, সস্ত্রীক সখানেই চলে এসেছিলেন। তবে ২০১৮ সালে ওই ব্যক্তির অকস্মাৎ মৃত্যু হয়।

দিল্লির স্পার্ম ব্যাঙ্কের সঙ্গে দু'বছরের চুক্তি ছিল তাঁদের। পুত্রের মৃত্যুর পরই , বাবা-মা সেখানে যোগাযোগ করে অনুরোধ করেছিলেন, মেয়াদ উদ্দীর্ণ হলেও, তাঁদের সম্মতি ছাড়া যেন ওই শুক্রাণু নষ্ট না করা হয়। কিন্তু, ২০১৯-এ হাসপাতাল থেকে মৃত ব্যক্তির বাবা-মাকে জানানো হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে দাতার স্ত্রীর ওই শুক্রাণু ব্যবহার করে নিজে গর্ভবতী হবেন, না অন্য কাউকে দান করবেন, না কি ষ্ট করে ফেলবেন - সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রোগীর স্ত্রীর। তিনি অনুমতি দিলে তবেই বাবা-মা সেই শুক্রাণুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এরপরই পুত্রবধূর কাছে 'নো অবজেকশন' সার্টিফিকেট চেয়েছিলেন পুত্র হারা বাবা। সেখান থেকেই মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বংশধরের আশা ছাড়তেই হল তাঁকে।

Share this article
click me!

Latest Videos

মাননীয়া জঙ্গিদের ঢুকতে দিচ্ছেন, কিন্তু চাকরি দিচ্ছেন না, শিল্প আনছেন না : Suvendu Adhikari
'জঙ্গিরা ধরা তো পড়ছে, তাহলে আর চিন্তার কি আছে?' হাসতে হাসতে উত্তর রচনার | Rachna Banerjee News
মমতা হারবে, DA ন্যায্য অধিকার, জয় আপনাদের দোরগোড়ায়, ঐক্যবদ্ধ থাকুন : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari Live : নবান্নের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্না অবস্থান মঞ্চে শুভেন্দু