
Pahalgam Attack: তদন্তে উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাকিস্তানে বসে থাকা হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য এক বিশেষ ধরনের পেইড মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (Paid Mobile Application) ব্যবহার করত জঙ্গিরা। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (NIA) সূত্রে এমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই পহেলগাঁও হামলার তদন্তের জন্য ৬ জন সদস্যকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এনআইএ-র বিশেষ দল। সেই দলে রয়েছেন দুজন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ-এর অফিসাররা (Pahalgam Attack News)।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, তদন্তকারী দলটি এরই মধ্যে বৈসরনে হামলার টুকরো টুকরো তথ্য সংগ্রহ করার কাজ করছেন এবং সেগুলিকে জুড়ে জুড়ে একত্রিত করছেন। বিশেষ করে কোন পথ দিয়ে জঙ্গিরা বৈসরন ইকো পার্কে ঢুকে পড়েছিল এবং হামলার পর ঠিক কোনদিক দিয়ে পালিয়েছে, সবকিছুই ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে ((Pahalgam Attack latest news)।
সেইসঙ্গে, ৪৫ জনের বেশি ট্টাটুঘোড়া চালক এবং এলাকার প্রত্যেক দোকানদারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে তদন্তকারী দল। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের প্রবল সন্দেহ রয়েছে জঙ্গিরা পাকিস্তানে বসে থাকা হ্যান্ডলারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং তাও আবার বিশেষ ধরনের একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ((Pahalgam Attack latest update)।
সূত্রের খবর, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এইসব কাশ্মীরি জঙ্গিদের হ্যান্ডলার হিসেবে ব্যবহার করার কাজ করে। কারণ, পহেলগাঁও হামলায় স্থানীয় জঙ্গি আদিল ঠোকরের নাম প্রকাশ্যে আসতেই তদন্তকারীদের অনুমান, এইরকম আরও অনেকেই আছেন, যারা হ্যান্ডলার হিসেবে এখনও কাজ করছে। আর তাদেরকেই এবার এবার খুঁজে খুঁজে বের করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তারা ((Pahalgam Attack update)।
ইতিমধ্যেই ১৪ জন জঙ্গির তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় কারা রয়েছে?
১. আদিল রহমান দেন্তু: জম্মু-কাশ্মীরের সোপোরের লস্কর-ই-তৈবা কমান্ডার। তথ্য বলছে, গত ২০২১ সাল থেকে বেশ সক্রিয় এই জঙ্গি। এবার সেই আদিলের খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করে দিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী।
২. আসিফ আহমেদ কন্ডে: সোপিয়ানে থাকে, গত ২০১৫ সাল থেকে হিজবুল জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে সে। সেইসঙ্গে, আবার পাকিস্তানি জঙ্গিদের মদতদাতা এই আসিফ।
৩. নাসির আহমেদ ওয়ানি: লস্কর-ই-তৈবার একদম সক্রিয় সদস্য, থাকে সোপিয়ানে।
৪. শাহিদ আহমেদ কুটে: লস্কর-ই-তৈবা এবং আর টিআরএফের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সে সোপিয়ানে বেশি সক্রিয়।
৫. আমির আহমেদ দার: লস্কর-ই-তৈবা আর টিআরএফের সক্রিয় সদস্য
৬. আদনান সফি দার: গত ২০২৪ সালে, লস্কর-ই-তৈবার আর টিআরএফ-এ যোগ দেয়। মূলত, পাক জঙ্গিদের মদতদাতা।
৭. জুবেইর আহমেদ ওয়ানি: প্রধানত হিজবুল জঙ্গি। অনন্তনাগে হিজবুলের অপারেশনাল কমান্ডার সে।
৮. হারুন রশিদ গনি: একজন হিজবুল জঙ্গি, অনন্তনাগে বেশি সক্রিয়। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে সম্প্রতি সে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে।
৯. জুবেইর আহমেদ গনি: লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি, থাকে কুলগামে।
১০. আসিফ আহমেদ শেখ: জইশ জঙ্গি। অবন্তীপুরার জেলা কমান্ডার এই আসিফ। গত ২০২২ সাল থেকে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।
১১. এহসান আহমেদ শেখ: পুলওয়ামার লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি।
১২. হরিশ নাজির: পুলওয়ামার বাসিন্দা এবং লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি।
১৩. আমির নাজির ওয়ানি: জইশ জঙ্গি, পুলওয়ামা এলাকায় বেশি সক্রিয়।
১৪. ইয়াবর আহমদ ভট্ট: জইশ জঙ্গি, পুলওয়ামাতে সক্রিয়।
তদন্তকারী বলছেন, ঠিক ৬ মাস আগে আদিলকে দক্ষিণ কাশ্মীরে বেশ কয়েকবার দেখা গেছিল। পরে অবশ্য সে পাকিস্তানে চলে যায়। আর এই ঘটনা থেকেই তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ হতে শুরু করেছে যে, পহেলগাঁও হামলার ঘটনাতে স্থানীয়দের একাংশের ভীষণভাবেই সহযোগিতা ছিল (India Pakistan Relation)।
এনআইএ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০, ২১ এবং ২২ এপ্রিল, এই তিনটি দিনের প্রতিটি মুহূর্তের আলাদা আলাদা করে তদন্ত চলছে। বিশেষত, দক্ষিণ কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে সেনা এবং পুলিশের যৌথবাহিনী। আরেকটি দল আবার এই হামলায় নিহতদের পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করার কাজ করছে (India Pakistan News)।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কার্তুজগুলিকে ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, মূলত তিনজন জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল। দু’জন পার্কের প্রধান প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকেছিল এবং আরেকজন বাইরে যাওয়ার অর্থাৎ এক্সিট গেট দিয়ে ঢুকেছিল, এমনটাই জানা গেছে সূত্র মারফৎ।
তাদের মধ্যে একজন জঙ্গির পরনে ছিল ট্র্যাকসুট এবং তৃতীয় জন কাশ্মীরি ঢিলেঢালা পোশাক পরে এসেছিল। আপাতত তদন্ত চলছে জোরকদমে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।